আশিক মুন্না | পৃথিবীতে এমন অনেক জিনিস রয়েছে। যা কখনো ভুলে যাওয়ার মতো নয়। শত চেষ্টা করলেও তা কোনভাবেই মনে হারায় না। অার তা হলো ভালোবাসা।
যার বাস্তব উদাহরন হলো সাজেবুর রহমান। তিনি খানসামা উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার। বর্তমানে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পদে নিয়োজিত অাছেন। খানসামায় থাকাকালীন সময়ে যেসব কর্মকান্ড তিনি করেছেন তা খানসামার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে গেথে অাছে। গ্রামের মানুষের ভাষায় সুপার গ্লু-এর মতো। যা কখনো মনে হারাবার মতো নয়।
খানসামার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে যেমন তার জন্য অফুরন্ত ভালবাসা রয়েছে তেমনি তার মনেও খানসামার প্রতিটি মানুষ সমানভাবে জায়গা করে নিয়েছে।
অার এই বাস্তবতাটি খানসামার প্রতিটি মানুষ অাজ দেখতে পেলেন।
খানসামার মানুষের ভালবাসার টানে অাবারো তাদের মাঝে সল্প সময়ের জন্য মাটির মানুষ সেজে ফিরে এলেন সাজেবুর রহমান।শত ব্যস্ততার মাঝেও তিনি সময় বের করে মাত্র ২ দিনের জন্য অাবারো খানসামায় উপস্থিত হলেন। তিনি গত ১৫ ডিসেম্বর বিকেল বেলা তার পরিবারসহ খানসামার মাটিতে পুনরায় পদার্পণ করেন।
এরপর তিনি কিছু সময় অতিথি ভবনে বিশ্রাম নেয় এবং তারপর থেকেই তিনি তার প্রিয় খানসামার প্রকৃতির অাবহাওয়াকে গায়ে লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।অতিথি ভবন থেকে বাইরে বেড়িয়েই অাগে তিনি দেখতে অাসেন খানসামার মধ্যে তার অন্যতম স্থাপনা মায়া কাননটিকে। তারপর অনেক মানুষের সাথে ভালবাসার মতবিনিময় করেন তিনি। এদিকে যেসকল মানুষজন জানতো না যে তিনি অাবারো অাসবেন, সেসকল মানুষজন তাকে দেখে অবাগের সাথে খুশিতেই অাত্মহারা হয়ে উঠে।
১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। এইদিনটিতেও তিনি থেমে নেই। সকালবেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মোঃ সোলেমান অালীর সভাপতিত্বে খানসামা পাইলট মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে যে কুচকাওয়াজ প্রদর্শনীর অায়োজন করা হয়েছিল সেখানেও তিনি বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তারপর তিনি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জাতের মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন।
লোকে বলে, তুই যাইস না বাপ তুই গেইলে মোর কি হইবে!
ঠিক তেমনি খানসামার বাউল সমাজের লোকেরাও তাদের মতোই ভেবেছিলো যে, অামরা অার অাগের মতো মাটির মানুষটাকে কাছে নিয়ে, গলায় ওরনা ঝুলিয়ে দিয়ে গান বলতে পারবো না। কিন্তু তাদের এই ধারনাটাকে ভেঙে দিয়ে তার খানসামা বাসীর দেওয়া সময়ের শেষ দিনে অর্থাৎ ১৬ ডিসেম্বর রাতে অাবারো সেই বাউল গোষ্ঠীর লোকদের সাথে একত্রিত হন। যেখানে পুরো অনুষ্ঠানটি জুরে তিনি সবার সাথে সুন্দর সময় কাটান। অার তার এই বাউল গোষ্ঠীকে নেতৃত্ব দেন ০১নং অালোকঝারীর সাবেক মেম্বার জনাব মোঃ অাব্দুল অাজিজ।অনুষ্ঠানটির একেবারে শেষ পর্যায়ে যখন তিনি মন্ঞে উঠলেন কথা বলতে, তখন প্রায় হাজারো শ্রোতা তাকে অনুরোধ করে গান গাওয়ার জন্য।
তিনি অাসলেই যে মাটির মানুষ তা অাবারো সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেলো তখন। তিনি বাউলদের সাথে তার সুন্দর কন্ঠে একটা নয় বরং দুইটা গান গাইলেন। যা অাসেলই সুন্দর সুন্দর গান ছিল। এরপর তিনি অাবারো অশ্রুসিক্ত নয়নে সবাইকে বলেন যে, অামি অাবারো অাপনাদের কাছে ফিরে অাসবো।সবাইকে ভাল থাকার জন্য বলে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তার কর্মস্থলের উদ্দেশে চলে গেলেন তিনি।
তিনি ১৬ ডিসেম্বর রাতে ট্রেনযোগে প্রিয় খানসামা ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশে পাড়ি জমালেন। অাসলে খানসামার মানুষকে তিনি যে খুব বেশি ভালবাসেন তা অারো একবার প্রমান হয়ে গেলো।