বীরগঞ্জ নিউজ ২৪ ডেস্কঃ
প্রস্তুাবিত সড়ক পরিবহন বিল-২০১৮-এর খসড়া অনুমোদনের প্রতিবাদে রংপুর বিভাগে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকরা। সড়ক নিরাপদ না করে আইন পাশের কারণে তারা বাস চালাচ্ছেন না। এদিকে শ্রমিকদের অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
রংপুর বিভাগীয় শ্রমিক পরিবহন ফেডারেশন সূত্রে জানা যায়, প্রস্তুাবিত সড়ক পরিবহন বিল-২০১৮-এর খসড়া অনুমোদনের প্রতিবাদে শ্রমিকরা রংপুর বিভাগের রংপুর, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও গাইবান্ধার জেলার সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। সড়কে বাস চলাচল নিরাপদ করে আইন পাশ করার দাবি জানিয়েছে তারা।
এ দিকে শ্রমিকদের অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বাস না পেয়ে অটোরিকশায় ও হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা।
সোমবার রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আন্তজেলা রুটে চলাচল করা সকল বাস সারিবদবধভাবে টার্মিনালে দাঁড়িয়ে আছে। আন্তজেলা রুটে বাস চলাচল না করায় অনেক যাত্রীরা বাস টার্মিনালে এসে ঘুরে যাচ্ছেন। অনেকে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন কোনো বাস পাওয়া যায় কিনা। তবে বিআরটিসি’র বাসগুলো চলাচল করতে দেখা গেছে।
বাস টার্মিনালে আসা যাত্রী রংপুর নগরীর শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি বাসে করে লালমনিরহাট যাওয়ার জন্য টার্মিনালে আসলাম। কিন্তু এখানে এসে দেখি কোন বাস চলাচল করছে না। শুনলাম শ্রমিকরা পরিবহন ধর্মঘট করছে। এখন ট্রেনে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় দেখছি না।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের রংপুর বিভাগীয় সভাপতি আখতার হোসেন বাদল সমকালকে জানান, ৩০২ ধারায় ৫ বছরের জেল এবং ৫ লাখ টাকা জরিমানা নিয়ে সারা বাংলাদেশে শ্রমিকদের মাঝে একটি আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ৩০২ এর মামলা নিয়ে শ্রমিকরা গাড়ি চালাতে চাচ্ছে না। কারণ অধিকাংশ শ্রমিকরাই গরীব, সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলে তারা কীভাবে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দেবে, ৫ বছরের জেল হলে তাদের পরিবার কেমন করে চলবে? আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। আন্তঃজেলায় বাস চলাচল না করলেও ঢাকাসহ দূরপাল্লায় বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে সড়ক পরিবহন বিল উপস্থাপন হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দিতে বিলটি সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলে বলা হয়, চালকের বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে বা অবহেলা জনিতকারণে সংঘটিত দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটলে উক্ত ব্যক্তি ৫ বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবে। বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে কাউকে আহত করলে তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আর ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ট্রাফিক আইন অমান্য করলে পয়েন্ট কাটার ব্যবস্থাও থাকবে আইনে। নির্ধারিত পয়েন্টের নিচে গেলে লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। চালককে নতুন করে আবার লাইসেন্স নিতে হবে।