হার্ড রকের সুরে এল ক্লাসিকো

ভেন্যুর নাম হার্ড রক স্টেডিয়াম। মেটালিকা, গানস অ্যান্ড রোজেস, পিংক ফ্লয়েড…কারা বাজায়নি এই স্টেডিয়ামে! তবে আজ গিটারের মূর্ছনা আর ড্রামের কান ফাটানো আওয়াজ এখানে মাতোয়ারা করবে না দর্শকদের, তারা মুগ্ধ হবেন ফুটবলের জাদুতে। ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নস কাপের ম্যাচে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় ভোরে ফ্লোরিডার এই স্টেডিয়ামেই মুখোমুখি বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। যদিও প্রীতি ম্যাচ, তবে ‘এল ক্লাসিকো’তে যে কোনো সম্প্রীতির সুর বাজে না, সেটা জানান দিয়েছে দুই পক্ষই।

সামনে বেশ কতগুলো প্রতিযোগিতামূলক ‘এল ক্লাসিকো’ই আসছে; আগস্টে দিন তিনেকের ব্যবধানে স্প্যানিশ সুপার কাপে দুইবার মুখোমুখি হবে লিগ চ্যাম্পিয়ন রিয়াল ও কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা। এরপর মৌসুমে লা লিগায় নির্ধারিত আরো দুটো এল ক্লাসিকো তো থাকছেই! ৩৫ বছর পর স্পেনের বাইরে কোথাও মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল ও বার্সেলোনা।

১৯৮২ সালে ভেনিজুয়েলায় মুখোমুখি হয়েছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী, মৌসুম শেষে এবং বিশ্বকাপের ঠিক আগেভাগে। ম্যাচটা নিয়ে আগ্রহ এত কম ছিল যে সেটা ইউরোপে টিভিতেও দেখানো হয়নি! অথচ এইবার খেলোয়াড় তো বটেই, আয়োজকদেরও আয়োজনের কমতি নেই। প্রতিবেদক-উপস্থাপক, ক্রুসহ ইএসপিএনের ২৫ জনের একটা দল আগেই পৌঁছে গেছে ফ্লোরিডায়, যাতে এই ম্যাচের একটা মুহূর্তও ফসকে না যায়। টিকিট তো সব বিক্রি হয়েই গেছে, কালোবাজারে দর উঠছে ৯০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত।

দর্শকদের উত্তেজনা ছুঁয়েছে খেলোয়াড়দেরও। বার্সেলোনার অনুশীলনে তো সেমেদোর সঙ্গে নেইমারের মারামারিই হয়েছে! সংবাদ সম্মেলনে আসা ইভান রাকিতিচকে নেইমার প্রসঙ্গেই বেশি কথা বলতে হয়েছে। তবে প্রীতি ম্যাচ হলেও কোনো ছাড় যে দেবেন না তারা সেটা স্পষ্ট করে বলে গেলেন, ‘ক্লাসিকো হচ্ছে ক্লাসিকো। এই ম্যাচগুলো আমরা খেলছি প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতির জন্য, এরপর সামনে স্প্যানিশ সুপার কাপে দুটি ম্যাচ আছে। সেই ম্যাচ দুটি জিততে হলে আমাদের সেরা প্রস্তুতিই নিতে হবে। সেই সঙ্গে আমাদের ভালো খেলতে হবে। আশা করছি আমরা ম্যাচটি জিতব। ’ এই ম্যাচ খেলে কতটা প্রস্তুতি হবে, এমন প্রশ্নে এই ক্রোয়াটের উত্তর, ‘দুটি ভিন্ন রকম পরিস্থিতি। এখানকার ম্যাচটি প্রীতি ম্যাচ, আর ওখানে আমরা মৌসুমের প্রথম শিরোপার জন্য লড়ব। ’

রিয়ালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের ক্যালিফোর্নিয়া অধ্যায় সমাপ্ত, কালই পাঁচ ঘণ্টার ফ্লাইট শেষে তারা পৌঁছে গেছে মিয়ামিতে। সেখানকার মান্দালয় ওরিয়েন্টাল হোটেলই এই পর্বে গ্যালাকতিকোদের ঠিকানা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসা সবাই অবশ্য আসেননি মিয়ামিতে, যুব দলের চার ফুটবলার ফিরে গেছেন স্পেনে। অধিনায়ক সের্হিয়ো রামোস যোগ দিয়েছেন অনুশীলনে। সংবাদ সম্মেলনে রিয়ালের হয়ে এসেছিলেন তরুণ ডিফেন্ডার ভালেসো, তাঁর কাছেই শোনা গেল, ‘এল ক্লাসিকো সব সময়ই বিশেষ উপলক্ষ আর গত একটা সপ্তাহজুড়ে অনুশীলন করার পর আমি রীতিমতো মাঠে নামার জন্য গজরাচ্ছি। কোচ যদি আমাকে দলে নেয় তাহলে মাঠে নেমে নিজেকে উজাড় করে দেব। ’

আপাতদৃষ্টিতে ‘অর্থহীন’ মনে হলেও বেশ ‘অর্থপূর্ণ’ই হয়ে উঠেছে মিয়ামির এই ক্লাসিকো। মেক্সিকো, কানাডা, পুয়োর্তোরিকো থেকে প্রচুর দর্শক এসেছেন এই ম্যাচের জন্য। এক রাতের হোটেল ভাড়া ৭৫০ ডলার থেকে শুরু, চাহিদা এতটাই। রিয়ালে খেলা সাবেক মেক্সিকান হুগো সানচেস বলছেন, ‘এই ম্যাচটি যারা মাঠে বসে দেখতে পারছে তারা ভাগ্যবান, ওদের সারা জীবনের একটা অভিজ্ঞতা হবে। ’ এএফপি, ক্লাব ওয়েবসাইট.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *