টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে আগামী শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এই ধাপে ঢাকার একাংশসহ ৪১টি জেলার মুসুল্লিরা অংশগ্রহণ করবেন। ইতোমধ্যে ইজতেমা মাঠ পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েছে।
তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা। বাংলাদেশ তাবলীগ জামাত শুরায়ে নেজামের অধীনে আগামী ৩১ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব-ইজতেমার প্রথম ধাপ। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের শেষ হবে। ৮ দিন বিরতি দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় ধাপের বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করবেন সাদ অনুসারীরা। ১৬ ফেব্রুয়ারি রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমা। পরে ১৮ ফেব্রুয়ারি বাদ মাগরিব প্রশাসনের নিকট ময়দান বুঝিয়ে দিবেন সাদ অনুসারীরা।
প্রথম ধাপে অংশগ্রহণ করছেন গাজীপুর, টংগী, ধামরাই, গাইবান্ধা, মিরপুর, কাকরাইল, নাটোর, মৌলভীবাজার, রাজশাহী, দোহার, ডেমরা, কাকরাইল, নড়াইল, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নবাবগঞ্জ, নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর, বগুরা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, নেত্রকোনা, শেরপুর, ফরিদপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বি.বাড়িয়া, খুলনা, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, ঝিনাইদহ, চাপাই নবাবগঞ্জ, পিরোজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড় ও রাজবাড়ী জেলা।
দ্বিতীয় ধাপে অংশগ্রহণ করছেন- যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, মোহাম্মদপুর, মুন্সিগঞ্জ, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, জয়পুরহাট, সিলেট, সিরাজগঞ্জ, মেহেরপুর, টাংগাইল, পাবনা, নরসিংদী, সাভার, কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, ঝালকাঠি, বরগুনা, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, নওগাঁ, বান্দরবন জেলা। এই ধাপে ঢাকার একাংশ সহ ২২টি জেলা অংশগ্রহণ করছেন।
তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ শুরায়ী নেজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, “এবারের ইজতেমা হযরত ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে শুরায়ী নেজামের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। প্রথম ধাপ জানুয়ারি ৩১ ও ১, ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপ ৩, ৪, ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। পুরা বাংলাদেশকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে এবং কে কোন ধাপে অংশগ্রহণ করবে তা ইতিমধ্যে জেলা ওয়ালাদেরকে মুরুব্বীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।”
তাদের দুই ধাপে ইজতেমা করার কারণ হিসেবে হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, “টঙ্গী মাঠের ১৬০ একর জায়গায় তাদের অবস্থান করাটা খুবই কষ্টদায়ক হয়ে যায়। গত কয়েক বছর শুরায়ী নেজামের অধীনে যে সকল ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছে, আপনারা জেনে থাকবেন আমাদের সাথীরা স্থায়ী টয়লেটের ছাদগুলোর উপরে, আশেপাশে ছোট ছোট মাঠগুলোর ভেতরে, এবং রাস্তায় ধুলাবালির ভিতর আমাদের সাথীরা কষ্ট করে অবস্থান করেছেন। এবার দুই ধাপে ইজতেমা হওয়ার কারণে তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।”
উল্লেখ্য, দেশ বিদেশী আগত মুসল্লিদের জন্য উত্তর পশ্চিমে তৈরী হয়েছে বয়ান মঞ্চ। বয়ান মঞ্চের পশ্চিম পাশে বিদেশী মেহমানদের থাকার ব্যবস্থা, মুসল্লি পারাপারের জন্য তুরাগ নদীর ওপর ভাসমান সেতু নির্মাণ করেছে সেনাবাহিনী। বিআইডব্লিউটিএ ব্রিজ নির্মাণ করেছে। এছাড়াও ইজতেমা ময়দানে সিটি টিভি স্থাপন করেছে র্যাব। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা।