নিজস্ব প্রতিবেদক
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় বিএনপির দু’পক্ষের নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ও অফিস ভাংচুর এবং একজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
রোববার (১৬ মার্চ) সকাল ১০টায় উপজেলার পাকেরহাট শাপলা চত্বরে প্রথমে আহত পরিবার বর্গ ও এলাকাবাসী আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সদস্য আজিজার শাহ্, মহশিন আলী শাহ্, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শাহরিয়ার জামান শাহ্ নিপুন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুর রউফ, খামারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক চৌধুরী, বিএনপি নেতা গোলাম কিবরিয়া জেহাদ, আলোকঝাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মাহাবুব সরকারসহ বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী গত শুক্রবার চিরিরবন্দর উপজেলার ৬নং, ৯নং ও ১০নং ইউনিয়ন বিএনপি কর্তৃক আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে চিহ্নিত চাঁদাবাজ বালু সন্ত্রাসীদের গুন্ডা-পান্ডারা হামলা চালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ আহতদের করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
মানববন্ধনে কর্নেল (অব:) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, আজকে অনেক কষ্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ইফতার মাহফিলের করার নির্দেশনা দিয়েছেন। চিরিরবন্দর উপজেলায় ৬ নং ৯ নং ১০ নং ইউনিয়নে ইফতার মাহফিলের আয়োজন ছিল ১৪ তারিখে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজনকারী ছিল চিরিববন্দর উপজেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আফজাল হোসেন চৌধুরী উনি যখন তারাবির নামাজ শেষে দাওয়াতি কার্যক্রম শেষ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় কিতিপয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তার উপরে লাঠিচার্জ করে তিনি দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আমরা বিগত ১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছি হাজার হাজার মানুষের প্রাণের আমরা চেয়েছিলাম একটি গণতন্ত্র সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের দীর্ঘ সংগ্রামের পরে আমরা আমাদের কাঙ্খিত সংগ্রামে পৌঁছাতে পেরেছি।
এরপর একই স্থানে দুপুর ১২টায় মানববন্ধনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান মিয়ার অনুসারী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আমিনুল হক চৌধুরী ও উপজেলা যুগ্ম আহবায়ক রবিউল আলম তুহিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোসলেম উদ্দীন সরকার, আলোকঝাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল ও সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, গোয়ালডিহি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন লিটন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ওবায়দুর রহমান, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রুবেল ইসলাম, উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব এনামুল হকসহ বিএনপি’র বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, খানসামা উপজেলা বিএনপির সুসংগঠিত রাজনীতি তে দ্বিধাবিভক্ত করার ষড়যন্ত্র ও আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনঃর্বাসনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
জেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল ইসলাম তুহিন বলেন, ঘোলা পানিতে একটি মহল মাছ শিকার করার চেষ্টা চলছে, খানসামা বিএনপির এক বিন্দু রক্ত থাকতে এই কাজ খানসামার মাটিতে আমরা কখনো করতে দিব না। আপনি দুইদিন আগে আমাকে ফোন দিয়ে বলে আপনি কি তুহিন সাহেব আমি বলি হুম আমি তুহিন। যে বিএনপির তুহিনকে চেনে না, বিএনপির আমিনুল হক বিএসসিকে চিনো না, যে মোহাম্মদ আলী সরকার ইউনিয়নের সভাপতিকে চেনেনা সে চিনে না, বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে সে কি পরিচয় দিতে চায়! সে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্টদের সাথে নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করে। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, আমাদের বিএনপিকে রক্ষা করতে হবে।
পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির ফলে পাকেরহাট বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। আখতারুজ্জামান মিয়ার সমাবেশ চলাকালে কয়েকজন কর্মী তাদের ফেসবুক লাইভে এসে পার্টি অফিস ভাংচুর চিত্র তুলে ধরেন। তবে সেই ভিডিও চিত্রে কে বা কাহারা হামলা করেছেন, তা দেখা যায়নি। অফিস ভাংচুরের বিষয়ে উপজেলার বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীদের ফোন দিলেও কেউ সারা দেননি। এ ঘটনায় সাব্বির হোসেন সাহস নামে এক যুবক আহত হয়ে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।