কমছেই না নারী ও শিশু নির্যাতন। নতুন ভাবে, নতুন আঙ্গিকে এই ভয়াবহতা বাড়ছে দিন দিন। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, তদন্ত ও বিচারকাজে ধীরগতি, এমনকি শাস্তি না হওয়ার কারণে অনেকেই উৎসাহিত হচ্ছে এ ধরনের অপকর্মে। তবে অপরাধ বিজ্ঞানীদের মতে, সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে না। সামগ্রিক মূল্যবোধে চরম ধসও এই অপরাধ বেড়ে যাওয়ার আর একটি কারণ।
নারী ও শিশু নির্যাতন নিয়ে আইন ও শালিস কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। শারীরিক, মানসিক নির্যাতন, পরিবারেও নানা ধরনের অত্যাচার বৈষম্যের শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু। ২০১৭ সালের যৌন হয়রানি ও সহিংসতার ঘটনা মোট ২৬১টি। যার মধ্যে আত্মহত্যা, আত্মহত্যার চেষ্টা, প্রতিবাদ করায় লাঞ্ছনা বা খুন।
চলতি বছরের ধর্ষনের পরিসংখ্যানও ভয়ঙ্কর। ৭৭৪টি ঘটনার তালিকায় ছয় বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনা যেমন আছে, তেমনি আছে গণধর্ষণও। ধর্ষনের পর হত্যা করা হয়েছে ৩৭ জনকে। আর এ কারণে আত্মহত্যা করেছে ১২ জন।
সবচেয়ে আস্থা ও ভরসার প্রতিষ্ঠান পরিবারেও নির্যাতনের শিকার নারী। এখানে নির্যাতনের কারণে হত্যা ও আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। ১০ মাসে এরকম ঘটনার সংখ্যা ৩৮০টি। যৌতুকের কারণে নির্যাতন হয়েছে ২৬৩টি এবং এর কারণে মারা গেছে ১২২ জন। গৃহকর্মী নির্যাতন হয়েছে ৩৭টি। আর এ কারণে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। প্রেম প্রত্যাখ্যান এবং শত্রুতার জেরে এবছর এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা মোট ৩০টি।
এবছর এরকম ১২৬টি মামলার পক্ষ হয়েছে আইন ও শালিস কেন্দ্র। তাদের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, মামলার অনুসন্ধান, বিচারকাজ শেষ হতে এত বেশি সময় লাগে তা ফলো-আপ করা কষ্ট হয়ে পড়ে তাদের জন্য।
তবে শুধু শাস্তি হলেই নারী ও শিশু নির্যাতন কমে যেত- এরকম ধারণার সাথে একমত নন এই বিশেষজ্ঞ। তার মতে জীবনমানের উন্নতি হলেও সমাজে অপরাধের যেসব কারণ আছে সেগুলোর পথ বন্ধ তো হয়ই নি, কোন কোন ক্ষেত্রে বেড়েছে। বিচারিক কার্যক্রম উন্নত করার পাশাপাশি সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো নারীবান্ধব করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।