আশিক মুন্নাঃ
চলছে আইপিএল এর চুরান্ত ম্যাচ, প্রতিবেশি দেশ ভারতের উত্তাপ এসে লেগেছে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি কোনায় কোনায়। যতটা না খেলা দেখে মানুষ তার থেকে বাজি লাগায়। উঠতি তরুন-কিশোর থেকে শুরু করে, বৃদ্ধ বা মাঝ বয়সী সবার মুখেই এক কথা। কিরে কত লাগাবি? না ভরকে যাবার কিছু নেই,এখানে ক্রিকেট ম্যাচে বলে বলে টাকা বাজি লাগানোর কথা বলা হয়েছে। দশ টাকা থেকে শুরু করে ত্রিশ,চল্লিশ কিংবা পঞ্চাশ হাজার টাকার বাজিও লাগানো হয় আইপিএল’র খেলা চলাকালীন সময়। শিক্ষিত ও প্রভাবশালী মানুষ জনও বাদ যায় না এমন বাজি নামক জুয়া খেলা থেকে। শুধু খানসামা সদরেই খুজলে এমন অনেক মানুষ পাওয়া যাবে যারা বাজি খেলে আজ নিঃস্ব হবার পথে আবার এমন অনেক ছেলে পাওয়া যাবে যারা বাজিতে হেরে পাওনা টাকা মেটাতে না পেরে কিংবা বাড়ি থেকে নানা অজুহাতে টাকা নিয়েও মেটাতে পারছেন না ধার দেনা। যার ফলে এসব তরুন হয়েছেন এলাকা ছাড়া।এখন খানসামার অন্যতম প্রধান সমস্যা গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে জুয়া। অবস্থা দেখে মনে হবে জিয়া আর মাদকে ডুবে থাকার মধ্যে কোণ পার্থক্য নেই যেন। বিভিন্ন এলাকার অনেক সাধারন মানুষ এই সমস্যার কারনে অতিষ্ঠ জীবন যাপন করছে।
যত দিন যাচ্ছে,খানসামায় ততো এই জুয়ার প্রভাব বিস্তার করছে।শুধু বড় বড় কোন খেলা নয় তথা সকল প্রকার ক্ষুদ্র খেলাগুলোতেও এখন জুয়া প্রবেশ করেছে।
জুয়ার মধ্যে রয়েছে ক্রিকেট,ফুটবল ইত্যাদি।ক্রিকেট-এ রয়েছে আইপিএল,বিপিএল সহ বিভিন্ন প্রিমিয়ার লিগের বাজি খেলা।
বর্তমানে চলছে আইপিএল আসর। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই খেলাকে কেন্দ্র করে খানসামা উপজেলায় বসছে জমজমাট জুয়ার আসর। খানসামার বিভিন্ন স্বনামধন্য ক্লাব, কিছু মোড়, হোটেল থেকে শুরু করে পাড়ার চায়ের দোকান ও খেলার মাঠে সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয়ে যায় আইপিএল নিয়ে হৈ-হুল্লোড়, হট্টগোল এসবের পাশাপাশি বাজি ধরার নামে চলছে জুয়া। প্রতি ওভার থেকে শুরু করে পাওয়ার প্লে ও পুরো ম্যাচ নিয়ে এই বাজি খেলা হয়।
আবার রাশিয়ায় ফিফা বিশ্বকাপকে সামনে রেখে চলছে জুয়া খেলার নানা প্রস্তুতি।
বর্তমান জুয়াতে ক্রিকেট ও ফুটবলকেও হার মানিয়েছে লুডু গেম নামক একটি খেলা।এই খেলায় স্বল্প সময়ে অর্থাৎ ম্যাচ প্রতি ২০০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত বাজি খেলা হয়।
ক্রিকেট জুয়ায় আসক্ত কয়েকজনকে তাদের এরকম জুয়া কেন খেলে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তারা জানায়,সবাইকে জুয়া খেলে টাকা কামাই করতে দেখে তাদের মনেও ঠিক সেরকমভাবে টাকা লাভ করার ইচ্ছা জাগে।এই খেলায় কখনও টাকা আসে, কখনও চলে যায়। তাই তারা এরকম খেলে।
খানসামা উপজেলার ০১ নং আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ.স.ম. আতাউর রহমান বাচ্চু -কে জুয়া খেলার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান,এটি বর্তমানে পুরো দেশেই ব্যাপক হারে চলছে। এইরকম জুয়া খেলার অনেক অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। আর এই বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রশাসনকে অবগত করেছেন।
তাই খানসামায় এই সমস্যা সম্পূর্ণ ভাবে দূরীকরণে ও এই সমস্যা যেন আর বেশি প্রভাব বিস্তার করতে না পারে তার জন্য সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে খানসামা উপজেলার সাধারন মানুষজন।