খানসামার মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বিদায় নিচ্ছেন ইউ.এন.ও সাজেবুর রহমান

আশিক মুন্না | বিদায় নিচ্ছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার জনবান্ধব উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাজেবুর রহমান । খানসামা উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মোঃ সাজেবুর রহমান বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।

আগামী ২০ নভেম্বর খানসামায় তাঁর শেষ কর্মদিবস। উল্লেখ্য যে, ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট খানসামায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করে বিগত দুই বছরে বিভিন্ন সময়োপযোগী কার্যক্রমের ফলে পাল্টে গেছে উপজেলার সার্বিক চিত্র।

উপজেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতে নজর রাখা, প্রতিটি অফিসে সেবার মান বৃদ্ধি এবং ভোগান্তি কমানো, প্রকৃত কৃষকের মাঝে উপকরন বিতরন, অবৈধ বালু উত্তলোন বন্ধ, বৃক্ষরোপণ অভিযান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মিড ডে মিল চালু, প্রকৃত হতদরিদ্রের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়া, ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা, হাট বাজারগুলো আধুনিক করা, স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বজায় রাখা, প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে খাস জমি বন্টন, ভিক্ষুকমুক্ত করণে ডাটাবেজ তৈরী,গৃহহীন দের ঘর নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহনসহ প্রভূতি কাজের জন্য পাল্টে গেছে পুরো উপজেলার চিত্র।

বিশেষ করে আদিবাসী ও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বিভিন্ন প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। এছাড়া দিনাজপুরের ১৩ টি উপজেলার মধ্যে তাঁর উদ্যোগেই খানসামাকে প্রথম বাল্যবিবাহ মুক্ত করা হয়েছে।

মাদক প্রতিরোধে তাঁর ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়, তিনি নিজে উপস্থিত থেকে ঝুঁকিপূর্ণ মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেন। সাজেবুর রহমানের উদ্যোগেই ২০১৬ সালের পহেলা পুরো উপজেলা জুড়ে ৬৭ কি.মি. মাদক বিরোধী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যা পুরো দেশে নজির স্থাপন করে।

উপজেলার কয়েকজন সচেতন লোকের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাঁর ফলেই অফিসগুলোতে অনিয়ম-দুর্নীতি ও ভোগান্তি কমেছে এবং প্রতিটি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে।

উল্লেখ্য যে, খানসামায় দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে দুইবার জেলার শ্রেষ্ঠ ইউএনও নির্বাচিত হয়েছিলেন।
(সুত্র-দৈনিক উত্তরবাংলা/১৫.০৯.২০১৭/)

এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাজেবুর রহমান বলেন, আমি প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছি,যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি আমার উপর সরকারের অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার। মানুষ তার কর্মের মধ্যে দিয়ে চিরজীবন বেঁচে থাকে, আমিও আমার কর্ম দিয়ে আপনাদের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই। সকল কাজে খানসামাবাসীর সহযোগিতা ও সমর্থন ছিল আমার মূল প্রেরণা।

তাই তার এই হঠাৎ বিদায়ের কথা শুনে খানসামার অনেক মানুষ তাদের প্রানের মানুষটিকে হারাতে বসেছে বলে জানান অনেকে। এছাড়াও এই বিষয়কে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও মানুষের বিরহের চিত্র ফুটে উঠেছে। তিনি আবেগ-আপ্লুত কন্ঠে আরো বলেন, খানসামার কথা আজীবন মনে থাকবে,এখানাকার মানুষের ব্যবহারে সত্যিই মুগ্ধ ।খানসামাবাসীর জন্য শুভ কামনা রইল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *