ডেইলি মিরর২৪ ডেস্কঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে আজ রোববার সকালে রেজিস্ট্রার ভবনে আসেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা।
বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ, বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আদর্শে গঠিত ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আমন্ত্রণ জানান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ক্যাম্পাসে ও সারা দেশের রাজনীতিতে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক বিরাজ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যখন যে দল ক্ষমতায় তখন সেই দলের সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের নিয়ন্ত্রণে থাকে। হলগুলো চলে মূলত ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে। অনেক সময় প্রশাসন ছাপিয়ে যায় তাদের কাজকর্ম।
গত প্রায় ২৮ বছর ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান সেখানে চোখে পড়েনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে বিএনপির ছাত্র সংগঠনের নেতারা ক্যাম্পাসে পর্যন্ত ঢুকতে পারে না। একই অবস্থা হয় বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে। তখন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতারা ক্যাম্পাসে থাকতে পারে না।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে পরিবেশ পরিষদের বৈঠকে আমন্ত্রণ পেয়ে সেখানে উপস্থিত হবেন ছাত্রদলের নেতারা এমন খবর আগেই জানা ছিল সবার। ছাত্রদলের নেতারা ক্যাম্পাসে আসছেন এ কারণে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয় কি না তা নিয়েও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী ও গণমাধ্যম কর্মীদের কৌতূহল ছিল অনেক।
কিন্তু সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দেখা গেল ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গাড়িতে করে সভাস্থল রেজিস্ট্রার ভবনে পৌঁছালেন। তাঁদের সঙ্গে এসেছেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম।
বেলা পৌঁনে ১২টায় বৈঠক শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। বৈঠক শেষ হয় বিকেল ৪টায়।
যখন ছাত্র সংগঠনের নেতারা বেরোচ্ছেন তখন দেখা গেল বাইরে ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী। আর ছাত্রদলের মাত্র ওই দুজন। ছাত্রদলের ওই দুই নেতাকে তখন নিরাপদে বের করার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী। ছাত্রদলের দুই নেতাকে ঘিরে ছাত্রলীগের নেতারা। ছাত্রদলের দুই নেতার মধ্যে ছিল আতঙ্ক। বারবার তারা পেছনের দিকে দেখছিলেন।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং বিশ্ববিদ্যালয়রে নেতারা ঘিরে রেখেই ছাত্রদলের দুই নেতাকে রেজিস্ট্রার ভবন থেকে বের করে আনলেন। এরপরই দুই নেতা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে ওই দুই নেতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি অপেক্ষা করছিল। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ছাত্রদলের নেতাদের বিদায় দিলেন সেখানে। বিদায়ী আলাপের মধ্যেই ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসানকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী।
এরপরই গাড়িতে উঠে বসলেন ছাত্রদলের নেতারা। বিদায় নেন ক্যাম্পাস থেকে।
সুত্রঃ প্রথম আলো