ডিজিটালাইজেশন ও বীরগঞ্জ- ০১

মোবাইলে টাকা পাঠানো থেকে শুরু করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করা আমরা যুগের ঠেলায় বাধ্য হয়ে শিখে গেলেও আসলেই কি আমরা তথ্য প্রযুক্তির আসল এবং সু-ব্যবহার করতে পারছি?

বীরগঞ্জে এমন অনেক এলাকা আছে যেখানে পল্লী বিদ্যুৎ এখনো ভাল মতো পৌছায়নি কিন্তু ফেসবুক পৌছে গেছে। অবশ্যই এই ঘটনার পজেটীভ ব্যাপার আছে কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট টার পরিমাণ একটু বেশী।

ক্লাশ থ্রি থেকে সরাসরি ক্লাস ফাইভে উঠার অনেক রেকর্ড আমাদের আদি প্রাইমারী লেভেলে ছিল, ডিজিটাল যুগের প্রাইমারী স্কুলে এমনটা না হলেও আমাদের ডিজিটালাইজেশন পদ্ধতিটাই এমন উদাহরণ হওয়ার যোগ্যতা রাখে।

এস এস সি তথা ম্যাট্রিক পাশ করার আগেই এন্ড্রোয়েড এর কড়া আলো!!
হ্যাঁ, বহিঃ বিশ্বে আরো অনেক ছোট থেকেই প্রযুক্তির সাথে মানব সন্তানকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, সে যুক্তিতে এটা এমন কোন ব্যপার নয় কিন্তু আমরা কি আসলেই জানি কিংবা বুঝি “হাউ টু ইউজ প্রযুক্তি?”

দুঃখ জনক হলেও সত্য এ দেশের মফস্বল এলাকায় ডিজিটাল এর সুফলের থেকে কুফলের পৌছা্নোর হার বেশী।

এসব জায়গায় একটি মেইল আইডি খোলা হয় একটি ফেসবুক আইডি খোলার জন্য, এখানে মেইল আইডি খোলা হয় ইউটীউবে ১৮+ কন্টেন্ট দেখার জন্য লগ ইন করতে।
পর্ণ সাইটের ব্যাপারটা না হয় সাইডেই রাখলাম। সেদিন শুনলাম, বীরগঞ্জে এই বছর অনেক মোবাইল ডাউনলোডের দোকানের ব্যবসা ভালো হয় নাই,কি ভাবেই আর হবে?

থ্রি জি তো আটকানোর তো কোন উপায় নাই, তার উপর এখন ডিজিটাল যুগ!! আগে যারাও দোকানে আসতো না লজ্জায় তাঁরা এখন গুগলের মাধ্যমেই সেই দুনিয়ায় !!

এই ডিজিটাল নামের যুগে কিছু ইফেক্ট পড়বে এটা স্বাভাবিক কিন্তু ব্যাপারটা খুব বেশী দৃষ্টিকটু যখন ডিজিটালাইজেশনের বাজে ইফেক্ট পড়ে কলেজের একজন সিনিয়র প্রভাষকের মধ্যে!! যার কিনা দায়িত্ব ডিজিটালাইজেশনের সুফল গুলো নিয়ে বেশী বেশী কথা বলা।

রাঘব বোয়াল মানুষগুলোর নামে এরকম অনেক গুরুতর চাপা ডিজিটাল অভিযোগ বাজারে বিদ্যমান।

এই রাঘব বোয়ালদের লিস্টে স্কুলের স্যার থেকে শুরু করে কলেজের প্রভাষক হয়ে এই লিস্ট সর্বোচ্চো ব্যাক্তি পর্যায় পর্যন্ত পৌছে যায়!!

কি অসম্ভব পরিস্থিতি !!

একজন কলেজের প্রভাষক(৪৫-৫০), পড়ান মফস্বলে কলেজ লেভেলের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটা সাবজেক্ট।

অন্য একটি কলেজের পরীক্ষার সেন্টার তাঁর কলেজ হওয়ায় সেই কলেজের মেয়েদের ইনিয়ে বিনিয়ে প্রাক্টীক্যাল মার্কের লোভ দেখান ফেসবুকে!!

ইনিয়ে বিনিয়ের মধ্যে প্র্যাক্টীক্যাল মার্কের জন্য টাকা নিয়ে মার্ক দেয়ার রেকর্ড অনেক আগে থেকে থাকলেও এই রকম বেহায়া টাইপ ব্যাপার আগে কখনো দেখা যায় নাই বীরগঞ্জে!!

এবার যখন ব্যাপারটা সামনে আসলো তখন ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আরো কয়েকজন এরকম ইনিয়ে বিনিয়ে মার্ক অফারকারীর ফেবু ম্যাসেজ এর স্কীন শর্ট দেখলাম!!

হিন্দু ধর্মে মৃত দেহ দাহ করতে নিয়ে যাওয়ার সময় হরিবল,হরিবল কেন বলে জানি না, এবার বীরগঞ্জে এসব দেখার পর আমার পাশে থাকা এক বন্ধু ইংলিশে বলেই বসলো হরিবল ডিজিটালাইজেশন!!

ব্যাপারটা দুই দিক থেকে দুই রকম…

নাম্বার ওয়ান…
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সস্তায়/প্রাইভেটলি এরকম লুতুপুতু সম্মানীয় মধ্য বয়স্ক ব্যাক্তিরা বরাবরের মত নিজেদের মুখোশ ধরে রাখতে পারেন নি।

নাম্বার টু…
উনারা ডীজিটালাইজেশন সম্পর্কে এতটাই অজ্ঞ যে, লুইচ্চামী করার পর ধরা খাওয়ার অপশন গুলা কি কি হইতে পারে সেটা সম্পর্কে তাঁরা ওয়াকিবহাল না!!!

বীরগঞ্জের এই কলেজের স্যার ডিজিটালাইজেশনের বলি নাকি পাঁঠা সেটা বুঝতে পারছি না, তবে এটা সত্য সাড়া বাংলাদেশের মতই আমাদের ছোট্ট বীরগঞ্জেও ডিজিটালাইজেশনের কু-প্রভাবের পরিমাণ অল্প নয়!!

#তৌফিক রয়েল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *