বীরগঞ্জ নিউজ২৪ ডেস্কঃ
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ঠিক ততই বড় দলগুলোর নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়গুলোর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম জোরালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলের সংসদীয় বোর্ডের সদস্যরা রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা করেছেন। এর মধ্যে তিন জেলার ১১ আসনের প্রার্থিতা মোটামুটি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
উত্তরের রংপুর বিভাগের আওতাধীন পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম এবং গাইবান্ধা জেলার আসন সংখ্যা ৩৩টি। ৮টি জেলার এ আসনের মধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২টি, জাতীয় পার্টি ৭টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি, জাসদ ১টি, জাতীয় পার্টি-জেপি ১টি এবং স্বতন্ত্র ১টি পায়।
আসনগুলোর মধ্যে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও এবং দিনাজপুরের ১১টি আসনে দলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে প্রথমে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এবং গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে বিশদ আলোচনা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা জানিয়েছেন। আসনগুলোর প্রার্থী তালিকাও মোটামুটি চূড়ান্ত হয়েছে।
এ সব আসনের মধ্যে পঞ্চগড়-১ আসনের বর্তমান এমপি নাজমুল হক প্রধান বাংলাদেশ জাসদের এবং ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের বর্তমান এমপি ইয়াসিন আলী ওয়ার্কার্স পার্টির। অন্য ৯টি আসনের এমপিরা আওয়ামী লীগের। তারা হচ্ছেন পঞ্চগড়-২ আসনে অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন, ঠাকুরগাঁও-১ আসনে রমেশ চন্দ্র সেন, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে দবিরুল ইসলাম, দিনাজপুর-১ আসনে মনোরঞ্জন শীল গোপাল, দিনাজপুর-২ আসনে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দিনাজপুর-৩ আসনে ইকবালুর রহিম, দিনাজপুর-৪ আসনে আবুল হাসান মাহমুদ আলী, দিনাজপুর-৫ আসনে অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার ও দিনাজপুর-৬ আসনে শিবলী সাদিক।
তাদের বেশিভাগের নামই চূড়ান্ত তালিকায় রয়েছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড়-১ এবং ঠাকুরগাঁও-৩ আসন ১৪ দলীয় জোটের প্রধানতম দুই শরিক বাংলাদেশ জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের গতকালের বৈঠকে নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম এবং গাইবান্ধা জেলার ২২টি আসন নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হলেও দলের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়নি। এ আসনগুলোর মধ্যে ১৩টি আওয়ামী লীগের। ৭টি জাতীয় পার্টির, ১টি জাতীয় পার্টি-জেপির এবং ১টি স্বতন্ত্র। তবে এ ৫ জেলার ২২টি আসনেই দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। অবশ্য জোটগত প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময় আওয়ামী লীগের তালিকায় কাটছাঁট হবে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দলের সংসদীয় বোর্ডের সাত সদস্য তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, রশিদুল আলম, ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও রমেশ চন্দ্র সেন মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। এ ক্ষেত্রে তারা বেশ গোপনীয়তা রক্ষা করছেন। তবে সংসদীয় বোর্ডের সব সদস্যের বাসায় মনোনয়নপ্রত্যাশীর ভিড় অনেক বেড়েছে। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আরও যোগাযোগ বাড়িয়েছেন।
দলের সংসদীয় বোর্ডের কয়েকজন সদস্য গণমাধ্যমকে জানান, সংসদীয় দলের গতকালের বৈঠকেও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা বেশ কয়েকটি জরিপ প্রতিবেদন নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। ওই সব প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের পাশাপাশি প্রতিটি আসনে প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের অবস্থানও তুলে ধরা হয়েছে। এ কারণে সংসদীয় বোর্ডের সদস্যরা আওয়ামী লীগের পাশাপাশি মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টভুক্ত শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীদের সর্বশেষ অবস্থান দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।
সুত্রঃ সমকাল