দিনাজপুরের বীরগঞ্জে কৃষকরা রঙিন ফুলকপি চাষে পাচ্ছেন সফলতা

Share

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাদা রঙের ফুলকপি খেতে অভ্যস্ত দিনাজপুরের বীরগঞ্জের মানুষ এখন পাচ্ছেন রঙিন ফুলকপি। রঙ দেওয়া নয়, প্রাকৃতিকভাবেই হলুদ ও বেগুনি রঙের এই ফুলকপির চাষাবাদ হচ্ছে এই উপজেলায়।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৩ জন চাষি ২০ শতাংশ জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ করেছেন। ১ হাজার ২০০টি হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপির চারা লাগানো হয়। এসব চারায় ভালো ফলন হয়েছে।

‘পরিবেশবান্ধব পদ্ধতির মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন’ প্রকল্পের আওতায় পরীক্ষামূলক চাষ সফল হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে রঙিন ফুলকপি চাষের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

তিন ইউনিয়নে পরীক্ষামূলকভাবে রঙিন ফুলকপি চাষ করে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন। রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্যে সাড়া মিলছে বাজারে, দাম পাচ্ছে কৃষক। এমন চাহিদায় খুশি কৃষক ও স্থানীয় কৃষি বিভাগ। উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের দামাইক্ষেত্র গ্রামের সবজি চাষি কুশল চন্দ্র রায় ২০ শতাংশ জমিতে চাষ করা হয়। তিনি বলেন, সাদা কপি ৫ টাকায় বিক্রি হলেও এ কপি এখনো ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পিস। ইতোমধ্যেই ৭ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছেন কুশল। তিনি আশা করছেন, বাকি ফসল থেকে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করবেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, চাষ করা হলুদ, গোলাপি ও হালকা লাল রঙের বাহারি ফুলকপি এখন শোভা পাচ্ছে জমিতে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ করে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন। চারা ছাড়াও ফুলকপি চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জৈব সার, কীটনাশক ও পরামর্শ দিয়ে তাকে সহযোগিতা করেছে উপজেলা কৃষি অফিস।

কুশল চন্দ্র রায়ের মতো ভোগনগর ও সাতোর ইউনিয়নের আরও ৪ জন রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাফুলকপি চাষিদের এনে দিয়েছে সাফল্যের স্বাদ।
বীরগঞ্জ পৌরশহরের বলাকা মোড় এলাকার সবজি ব্যবসায়ী মো. হাসান আলী জানান, এ কপির পুষ্টি এবং গুনাগুন অনেক ভালো। রঙিন ফুলকপি বাজারে আসা মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কৃষকরা যদি এই চাষ আরও বাড়ান, তবে এটি হয়ে উঠবে অত্যন্ত লাভজনক একটি ফসল। স্থানীয় ক্রেতা আশারুল বলেন, ক্ষেত থেকে ২০ টাকা দরে রঙিন ফুলকপি কিনেছেন তিনি। দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, খেতেও তেমনি সুস্বাদু।

বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানান, পরীক্ষামূলক এই চাষে কৃষকরা আশানুরূপ ফলন ও বাজারমূল্য পেয়েছেন। রঙিন ফুলকপির পুষ্টিগুণ সাদা ফুলকপির তুলনায় অনেক বেশি এবং এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তিনি আরও জানান, এ বছর উপজেলায় ৭০২ হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষ হয়েছে এবং এর মধ্যে এক একর জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাজারে এর উচ্চ চাহিদা থাকায় আগামী বছর আরও বেশি কৃষক এই চাষে যুক্ত হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Recent Posts

আর্কাইভ

সকল ক্যাটাগরি

Related Articles

বীরগঞ্জে লিচু ফলন নিয়ে শঙ্কায় চাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক দিনাজপুরের বীরগঞ্জে লিচুর ফলন শঙ্কায় চাষিরা, টানা অনাবৃষ্টি আর মৃদু...

দিনাজপুরে বীরগঞ্জে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনে কৃষকদের ভাগ্য বদল

নিজস্ব প্রতিবেদক চাষ করে লাভের অংকটা বেশি হওয়ায় পেঁয়াজের বীজের আরেক নাম...

দিনাজপুরে লিচুর গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক দিনাজপুরে গত বছরের চেয়ে এবার লিচু গাছে মুকুল বেশি দেখা...

হাবিপ্রবি উদ্ভাবিত ট্রাইকোডার্মার বায়োফানজাইসাইড ব্যবহারে টমেটোর দ্বিগুণ ফলন

নিজস্ব প্রতিবেদক দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কৃষি...

দিনাজপুর জেলা ও বীরগঞ্জ উপজেলার সকল খবর পেতে আমাদের সাথে থাকুন।

নির্বাহী সম্পাদক: নাজমুল হাসান সাগর | প্রধান কার্যালয় : ঝাড়বাড়ী, বীরগঞ্জ, দিনাজপুর | ইমেইল: [email protected]

ওয়েবসাইটের লেখা/ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।