দিনাজপুরের বীরগঞ্জে শিমুলের সৌন্দর্যে নতুন সাজে সেজেছে প্রকৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

উপজেলার প্রধান সড়কের হাটখোলা, বলাকা মোড়স্থ বিষ্ণু মন্দির ও মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান প্রাঙ্গণে দেখা মিললো কয়েকটি ফুটন্ত ফুলের রক্তলাল পলাশ-শিমুল গাছ। অন্যদিকে ঋতুরাজ বসন্তে এখন আর হরহামেশাই চোখে পড়ে না রক্তলাল শিমুল গাছ। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের প্রত্যান্ত গ্রামঞ্চলে গুটি কয়েক শিমূল গাছে ফুল দেখা গেলেও বর্তমানে কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে তা।

গাছে গাছে সবুজ পাতা, মুকুল আর ফুল আর কোকিলের ডাক মনে করিয়ে দেয় বসন্তের আগমনী বার্তা। আম কাঁঠালসহ, লিচু লেবু ও বিভিন্ন গাছের পাতা ও মুকুল দেখে বোঝা যায় শীত বিদায় নিয়ে আবার এলো ফাগুন, এলো বসন্ত। কিন্তু কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার প্রকৃতি থেকে এখন বিলুপ্তির পথে মূল্যবান শিমুল গাছ। তাই আগের মতো খুব একটা চোখে পড়ে না ফাগুনের রঙে রাঙানো রক্তলাল শিমুল গাছ। গ্রামে শিমুল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবেও পরিচিত। গ্রামাঞ্চলের মানুষ বিষ ফোঁড়া, আখের গুড় তৈরিতে শিমুলের রস ও কোষ্ঠ কাঠিন্য নিরাময়ে গাছের মূলকে ব্যবহার করতো।

কিন্তু নানা কারণে তা হ্রাস পেয়েছে। এখন আর শিমুল গাছ কেউ রোপণ করে না। শিমুল গাছ এমনিতেই জন্মায় তা দিনে দিনে বড় হয়ে একদিন বিশাল আকৃতি ধারণ করে। বসন্তে শিমুল গাছে রক্ত কবরী লাল রঙে ফোটে তোলে, দৃষ্টি কেড়ে নেয় সবার মন। কিছুদিন পরে রক্তলাল থেকে সাদা ধুসর হয়ে তুলার তেরি হয়। গ্রাম বাংলার এই শিমুল গাছ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দিতো। গ্রামের মানুষেরা এই শিমুলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করতো। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাতো লেপ, তোষক, বালিশ।

শিমুলের তুলা বিক্রি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছে, এমন নজিরও আছে। তবে কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় বীরগঞ্জ উপজেলায় আগের মতো তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছের। প্রতিনিয়ত বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ। যার কারণে গ্রাম বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে, অতি চিরচেনা শিমুল গাছ।

বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার সেন বলেন, বসন্ত মানেই শিমুল ও পলাশ ফুল। এবারের বসন্তে ঘুরে আসতেই বীরগঞ্জ উপজেলায় শিমুল গাছগুলোতে আগুনরাঙা নতুন রূপে সেজেছে প্রকৃতি। সহৃদয়ের ব্যাকুলতা নিয়ে এসেছে বসন্ত। কবি নির্মলেন্দু গুণ লিখেছেন, ‘ হয়তো ফুটেনি ফুল রবীন্দ্র -সঙ্গীতে যতো আছে, হয়তো গাহেনি পাখি অন্তর উদাস করা সুরে বনের কুসুমগুলি ঘিরে। আকাশে মেলিয়া আঁখি তবুও ফুটেছে জবা, দুরন্ত শিমুল গাছে গাছে, তার তলে ভালোবেসে বসে আছে বসন্তপথিক। ‘ আগে শিমুল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবেও পরিচিত ছিলো । বর্তমানে শিমূল গাছ বিলুপ্তের পথে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *