ধ্বংসপ্রায় খানসামার ঐতিহাসিক “আওকরা” মসজিদ, যে মসজিদ “কথা বলতো”!

Share

আশিক মুন্না | মোঘল স্থাপত্য শৈলী অনুযায়ী নির্মাণ করা খানসামার “আওকরা” মসজিদটি প্রায় আড়াই শ বছর পূর্বে বাংলা
১১৭২ সালে মীর্জা লাল বেগ নির্মাণ করেছিলেন। মুসলিম সম্প্রদায়ের নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে একটি মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।

চিকন ইটে নির্মিত দেয়ালে নকশা করা মসজিদটি উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া বেলান নদীর পূর্ব ধারে মীর্জার মাঠ নামক স্থানে অবস্থিত।

ওই এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরা ধারণা করেন এক সময় মসজিদটির আশপাশে মুসলিম জনবসতি ছিল।
যে কারণে এখানে ঐতিহাসিক মসজিদটি নির্মাণ করা
হয়েছিল এবং ব্রিটিশ সরকারের আমলে অথবা অন্য
কোন কারণে তারা মসজিটির আশপাশ এলাকার ছেড়ে
অন্যত্র চলে যায়। ফলে এটি অযত্ন-অবহেলায় পরিত্যক্ত অবস্থায় দীর্ঘকাল পড়ে থাকে।

পরবর্তীতে সংস্কারের অভাবে ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে থাকে মসজিদটি।তবে মীর্জা লাল বেগের ওই মসজিদকে ঘিরে র্মীজার মাঠে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠত হয়। যা পরে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

এছাড়াও একই স্থানে এলাকাবাসীর উদ্যোগে র্মীজার মাঠ
আওকরা মসজিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে আরও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়।মজার ব্যাপার হলো, মীর্জা সাহেব মসজিদটি প্রতিষ্ঠার সময় কি নাম রেখেছিলেন সেটাও কেউ বলতে পারে না।

নামকরনের কথিত ইতিহাস: লোক মুখে প্রচলিত আছে, পথচারিরা মসজিদটির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তায়
চলাচলের সময় এটির মধ্যবর্তী অংশে দূর থেকে
দাঁড়িয়ে কথা বললে এক সময় জোরে প্রতিধ্বনির
সৃষ্টি হত। তাই শুনে পথচারিরা ভাবত মসজিদটি তাদের কথার উত্তর দিচ্ছে। এ থেকে মসজিদটির নাম হয়ে যায়
আওকরা মসজিদ অর্থাৎ কথা বলা মসজিদ।

এখনও এই মসজিদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শব্দ করে কথা বলেন প্রতিধ্বনি শোনার আশায়। কিন্তু মসজিদের দেয়াল ফেটে গিয়ে নষ্ট হওয়ায় এবং এর গায়ে আগাছা পরিপূর্ণ হওয়ায় আগের মত আর আওয়াজ হয় না।

ওই এলাকার একাধিক প্রবীণ লোকজনের সাথে কথা বলেও মসজিদটিতে সর্বশেষ কত সালে নামাজ আদায় হয়েছে তা জানা যায়নি।তবে মীর্জা লাল বেগের ওই মাঠে জাজ্বল্যমান দুটি প্রতিষ্ঠান থাকলেও উপজেলার একমাত্র পুরাকীর্তি ও ঐতিহাসিক আওকরা মসজিদটির প্রতি সরকারি বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠান কিংবা ধর্মভিরু মুসলিম বিত্তশালীরা কেউই এটির প্রতি দৃষ্টিপাত করছেন না।

ফলে মসজিদটির যেটুকু অংশ এখনও অবশিষ্ট রয়েছে সেটুকুও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। খানসামা উপজেলার ৬ নং গোয়ালডিহি ইউনিয়নের হাসিমপুর-আংগার পাড়ার
মীর্জার মাঠ নামক স্থানে অবস্থিত এই মসজিদটির প্রতি প্রসাশনের দৃষ্টিপাত করা উচিৎ। এটি হতে পারে উপজেলার একমাত্র ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান।সব থেকে পুরনো ঐতিহাসিক এই নিদর্শণটি রক্ষা করে উপজেলার ঐতিহাসিক সাক্ষিকে টিকিয়ে রাখা উচিৎ এবং কর্তব্য।

Recent Posts

আর্কাইভ

সকল ক্যাটাগরি

Related Articles

বীরগঞ্জে সংবাদ কর্মীদের নিয়ে জামায়াতের ইফতার মাহফিল

নিজস্ব প্রতিবেদক দিনাজপুরের বীরগঞ্জে সকল সংবাদ কর্মীদের নিয়ে জামায়াতের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত...

কাহারোলে মানবিক সংগঠন হাইয়্যা  আল ফালাহ এর উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

নিজেস্ব প্রতিবেদক শুক্রবার (১৪ মার্চ) ২০২৫ দিনাজপুরের কাহারোলে মানিবক সংগঠন হাইয়্যা আল...

বীরগঞ্জে জমিসংক্রান্ত বিরোধে উভয় সংঘর্ষে নিহত ১, আটক ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক দিনাজপুরে বীরগঞ্জে জমিসংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে সংঘর্ষে আহত মো. মফিজুল ইসলাম...

বীরগঞ্জের নবাগত ইউএনও তানভীর আহমেদ শহীদ আল আমিনের কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক দিনাজপুরে বীরগঞ্জে নবাগত ইউএনও তানভীর আহমেদ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে...

দিনাজপুর জেলা ও বীরগঞ্জ উপজেলার সকল খবর পেতে আমাদের সাথে থাকুন।

নির্বাহী সম্পাদক: নাজমুল হাসান সাগর | প্রধান কার্যালয় : ঝাড়বাড়ী, বীরগঞ্জ, দিনাজপুর | ইমেইল: [email protected]

ওয়েবসাইটের লেখা/ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।