বাঁচার আকুতি

জলস্পর্শী তটিনী
আমারো খুব ইচ্ছে করে-
দুধ সাদা এক সুহাসিনী ভোরে,
দেখবো আমি প্রভাত।
আলো ছায়ায় খেলার ছলে-
তোমার পেটে আলতো করে,
করবো কতো আঘাত।
ব্যথা পেয়েও উঠবে হেসে-
করবে আদর ভালোবেসে,
পেটে রেখে হাত।
সময় পেলেই গুনগুনিয়ে শুনাবে আমায় গান,
গান শুনেই ভেঙে যাবে আমার অভিমান।
আমায় নিয়ে করবে নালিশ ফিরলে বাবা রাতে,
বাদী বিবাদীর নিয়ে শালিশ বসবে সাথে সাথে।
এসব কিছু কবে হবে ভাবতেই গেলো তিনটি মাস,
হঠাৎ করেই মায়ের খুশি পাল্টে হলো দীর্ঘশ্বাস।
কি হচ্ছে মায়ের সাথে পাইনা আমি খুজে,
অবহেলা আর অত্যাচার সইছে মা চোখ বুজে।
কি জানি কি বলেছিলো সেদিন ডাক্তার বাবাকে,
সেদিন থেকে সবাই মিলে বকছে আমার মাকে।
দাদু আমার গোমরা মুখে বলছে দিবা রাতি,
ধনীর চিহ্ন হাতি আর বংশের চিহ্ন নাতি।
বাবা রোজ বলছে মাকে চাইনা তোমার কন্যা,
প্রদীপ জ্বালাতেও পুত্র লাগে মেয়ে অলক্ষীর বন্যা।
নিজের মনেই প্রশ্ন জাগে সত্যি কি আমি অপয়া?
বাবা তুমি কেন বুঝনা আমি যে তোমার তনয়া।
কন্যা শিশু গর্ভে বলেই মনে তোমার এতো রোশ,
সবাই মিলেই তোমরা কেন মিথ্যে দিচ্ছো মায়ের দোষ?
ভালো আমায় নাই বা বাসলে নাই বা দিলে বুকে ঠাই,
তবু আমি তোমার বাবা হাতটি ধরে হাটতে চাই।
দোহাই তোমার দয়া করো করোনা আমার গর্ভপাত,
বাঁচতে দাও এ ধরায় বাবা হাতে রেখে তোমার হাত।
ইচ্ছে যদি নাই বা থাকে আমার কথা ভেবোনা,
ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে কভু আমায় তোমরা মেরোনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *