২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পেয়েছিল বাংলাদেশ। তারিখটা ২৬ জুন। অপেক্ষার প্রহর কাটিয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেক হয়েছিল সে বছরেরই ১০ নভেম্বর। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, আয়ারল্যান্ডের নারী ক্রিকেট দল টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশের আগেই!
২০০০ সালের ৩০ জুলাই ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজ মাঠে পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দলের সঙ্গে টেস্ট খেলেছিল আইরিশরা। বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ঠিক এক মাস পর। ম্যাচটি কিন্তু জিতেছিল আয়ারল্যান্ডই। দেড় দিনেই পাকিস্তানিদের উড়িয়ে দিয়েছিল তারা। আরও অবাক হতে পারেন এই তথ্যে, এরপর আয়ারল্যান্ডের মেয়েরা আর কোনো টেস্টই খেলেনি!
এ শতকের শুরুতে নারী ক্রিকেটটা ছিল খুব এলোমেলো। পাকিস্তানে মেয়েদের ক্রিকেটের অবস্থা আরও খারাপ। সেখানে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড নয়, ক্রিকেট চালাত উইমেন্স ক্রিকেট কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশন। সে সময় আর্থিক সংকটটাও ছিল বেশ। নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই আয়ারল্যান্ড সফর করেছিল পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দল।
সে সময় অনেকে জানতেনই না, টেস্ট কীভাবে খেলতে হয়। সে অবস্থাতেই ট্রিনিটি কলেজের মাঠে মুখোমুখি পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ড। পাকিস্তান নারী দল টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছিল। ৪৭ ওভার ৪ বলে তারা গুটিয়ে যায় মাত্র ৫৩ রানেই। দুই অঙ্কের সংগ্রহে পৌঁছেছিলেন মাত্র দুজন।
জবাবে আইরিশরা ৪৭ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে দেয়। কারণ তাদের মনে হচ্ছিল এই ম্যাচ বুঝি অনন্তকাল ধরে চলছে! দ্বিতীয় বার ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান ১ উইকেটে ৮ রান করার পর প্রথম দিনের খেলা শেষ হয়। দ্বিতীয় দিনে অবশ্য পাকিস্তানের ইনিংসের চেহারাটা প্রথম ইনিংসের তুলনায় কিছুটা ভদ্রোচিত চেহারা নিয়েছিল। ৫৪.১ ওভার খেলে ৮৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় তারা।
দেড় দিনেই শেষ হয় চার দিনের টেস্ট ম্যাচ। আইরিশরা জিতেছিল ইনিংস ও ৫৪ রানে। ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়ে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছিলেন ইসাবেল জয়েস। এরপরে আর টেস্ট খেলার সৌভাগ্য হয়নি আয়ারল্যান্ড দলের। কিন্তু পরে ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে আয়ারল্যান্ড ৪-০-তে জিতেছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে।
আয়ারল্যান্ড এখন টেস্ট খেলুড়ে দেশ। আজ ডাবলিনেই ১১তম টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে অভিষেক হচ্ছে আইরিশদের। প্রতিপক্ষও সেই পাকিস্তান। ১৮ বছর আগে মারিয়াম গ্রেলি কিংবা ইসাবেল জয়েসরা কী তাদের একটু হলেও অনুপ্রাণিত করবে না!
#prothomalo