নদীটার নাম ঢেপা কেন হয়েছে সেটা আজ প্রসংগ নয়, প্রসঙ্গটা অন্য। রাজনীতি নিয়ে ধারাবাহিক পর্বগুলোতে আজ থাকছে একটি ব্রিজ এবং তার উপর দিয়ে চলা রাস্তাকে নিয়ে রাজনীতি।
আটাশ মাইল খোচাবাড়িতে রাস্তার উপর কোন দুর্ঘটনা ঘটলে কিংবা রাস্তা বন্ধ থাকলে দিনাজপুর রংপুর থেকে ঠাকুরগা এবং পঞ্চগড় গামী সকল গাড়ী বিকল্প রাস্তা হিসেবে যে রাস্তা ব্যবহার করে সেটার নাম খানসামা রোড।
বীরগঞ্জ উপজেলার প্রায় অর্ধেক মানুষ এই রাস্তা ব্যবহার করে নিয়মিত।প্রধানরাস্তার পরে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এই খানসামা রোড। অথচ এই রাস্তার বেহাল দশা এবং ঢেপা নদীর উপর ব্রিজটির দৈন্যদশা অই রাস্তা ব্যবহারকারী সকলেই জানেন।
গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির কেন এই দুরাবস্থা ?? নাকি এর মধ্যেও রাজনীতি আছে?
এই রাস্তা এবং এই রাস্তায় ঢেপা নদীর উপর ব্রিজটি সংস্কার নিয়ে প্রতিশ্রুতি সেই ছোট বেলাতেই শুনেছিলাম,তাও বর্তমান সংসদ সদস্য যখন প্রথমবার নির্বাচিত হন সেটা তখনকার ঘটনা। আমার স্পষ্ট মনে আছে উনি নির্বাচনী মেনুফেস্টোতে এই রাস্তা এবং এই ব্রিজ এর সংস্কারের কথা বলেছিলেন।
যাই হোক, সেদিন দেখলাম মাননীয় সংসদ সদস্য সংসদে ভাষন দিচ্ছেন, ব্যপারটা অনেকটা রেয়ার কেসের মত, এই জন্য পুরো ভাষন টা মনোযোগ দিয়ে শুনলাম।
পুরো ভাষন টাতে বীরগঞ্জ এর কোন সমস্যার কথা তো উনি বললেনই না, শুধু আসনের নাম বলার সময় বীরগঞ্জ-কাহারোল বললেন।
প্রায় পুরো বক্ত্যব্যে কাহারোলের কথাই বলে গেলেন, ভাষন টা দেখে ফেসবুকে সেদিন শেয়ার দিয়ে লিখেছিলাম “ কাহারোলের সাংসদ”। মাঠ পর্যায়ে কথাটা কতটা বাস্তব সেটা পাশের উপজেলা কাহারোল এর উন্নতির চিত্র দেখলেই বুঝা যায়
বীরগঞ্জ –কাহারোলের চক্করে পরে ঢেপা ব্রীজ নিয়ে রাজনীতির হিসেব নিকেশ এবং ভোট এর হিসেব নিকেশ এক কাতারে, উন্নয়ন কি শুধু দেখানোর জন্যই নাকি সেটা মানুষের জন্য?
উনি উনার কথা রাখতে কেন পুরোপুরি পারেন নি সেটা ভিন্ন বিষয়, কিন্তু সাধারণ নাগরিক হিসেবে এই প্রশ্ন তোলার অধিকার অবশ্যই সবার আছে।
উনি টানা ১২ বছর সেই এলাকার সাংসদ,যেই প্রতিশ্রুতি তিনি ১২ বছর আগে দিয়েছেন সেটা পূরণ করতে না পারাটা কি ব্যার্থতা নাকি স্বদিচ্ছার অভাব?
রাজনীতিটা এখানেই।
সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা যায় বর্তমান সাংসদ একটি ধর্মের মানুষের ভোটে জেতে,
ব্যাপারটা অনেকটা এভাবে ব্যাখা করা যায়,এম পি গোপাল বীরগঞ্জে ভোট যা পায় সেটা দিয়ে অন্য প্রার্থীর চেয়ে পিছিয়েই থাকেন, কিন্তু তার ভোট ব্যাংক কাহারোলের একটি সম্প্রদায়ের মানুষ ।সেখানে একচেটিয়া ভোট পেয়ে প্রতিবারই জিতে যান তিনি।
এই জনশ্রুতি অনেকাংশেই সত্য। এবং এটাও সত্য যে এ কারণেই বীরগঞ্জের উন্নতির দিকে মাননীয় সংসদ সদস্যের ভ্রূ টা একটু কম বাঁকা হয়।
এবং ঢেপা ব্রিজ যে মানুষেরা ব্যাবহার করে সে মানুষের মধ্যে কিছু মানুষ তাকে ভোট দেয় না এবং বেশির ভাগই নির্বাচনী এলাকার বাইরের।
এই জেদ থেকেই যদি ঢেপা ব্রিজের করুণ দশা শর্তেও এতদিনেও কোন পদক্ষেপ না নেয়া হয় সেটা আমাদের বীরগঞ্জ বাসীর দুর্ভাগ্য।
পক্ষান্তরে বীরগঞ্জের স্থানীয় রাজনীতিবিদরা এই ব্রিজ সংস্কারে কেন উচ্চকন্ঠ নয় সেটাও জনগনের মনে প্রশ্ন তোলে।
লিখেছেনঃ তৌফিক রয়েল