নিজস্ব প্রতিবেদক
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মহাসড়কে যত্রতত্র বাস, সিএনজি ও অটোরিকশার বেপরোয়া চলাচলে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে বীরগঞ্জের ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কে। মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে আবির্ভুত হয়েছে অটোরিকশা স্ট্যান্ডগুলো। এতে ঘরমুখো মানুষের ঈদ যাত্রা পরিণত হয়েছে ভোগান্তিতে।

সরজমিনে দেখা যায়, সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে তাজমহল মোড় সংলগ্ন মহাসড়কের উপরেই ঢাকা গামী কোচ স্ট্যান্ড, থানা সংলগ্ন বাস স্ট্যান্ড, থানার বিপরীতে কাহারোল গামী পাগলু স্ট্যান্ড, বিজয় চত্বরে পাশাপাশি একই স্থানে বোচাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডসহ ৪টি স্ট্যান্ড, আশা সুইটস সংলগ্ন কবিরাজ হাট গামী পাগলু স্ট্যান্ড ও হোটেলের বিপরীতে দিনাজপুরগামী অটো এবং সিএনজি স্ট্যান্ড, তাজমহল মোড়ে বাসসহ পাশাপাশি ৮টি অটো ভ্যান ও রিকশা স্ট্যান্ড। পাশেই বাজার থাকার কারনে এই ব্যস্ততম সড়কে প্রতিদিন ঘটছে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা।
এ দুর্ঘটনায় কারো কারো চলে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণ। আবার দুর্ঘটনায় অঙ্গ হানি নিয়ে অন্যের কাধে বোঝা হয়ে বেঁচে থাকতে হয় বাকি জীবন। স্বাভাবিক
যান চলাচলের জন্য মহাসড়কের রাস্তার দুই পাশে অবস্থিত ফুটপাতের দোকানপাট উচ্ছেদের নোটিশ দিলেও প্রশাসনকে তোয়াক্কা করছেন না দোকানদাররা। পৌরসভার প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপংকর বর্মন গত ১ মাস আগে পাকা সড়কের উপর থেকে ভ্যান, রিক্সা, অটো, সিএনজি গাড়িগুলো তারিয়ে দেন।তারিয়ে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি যখন চলে যান, পরে আবার আগের মতই যানজট অর্থাৎ কোনো কাজে আসেনা এ অভিযান। এ সড়কে কেউ রেখেছেন নসিমন, করিমন আবার কেউ বা রাস্তার উপরেই ট্রাক পার্কিং রেখে মালামাল নামাচ্ছে।
যাত্রীবাহী বাসের ড্রাইভার শহিদুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কের উভয় পাশে রোড বড় করা হলেও কোন কাজে আসছে না। বাসস্ট্যান্ডগুলোতে অবৈধ ভাবে পার্কিং করার কারনে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস চলাচলে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। যানজটের সৃষ্টি হয়ে যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। মহাসড়কে বাস, অটোরিকশা রাখার কারনে দুইটা গাড়ি অনেক সময় পাশ কাটিয়ে যাওয়া অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। সিএনজি ড্রাইভার রিয়াজ বলেন, রাস্তার দুই পাশে ফুটপাত ও অটো রিকশার দখলে। হাইওয়ে থানা, বীরগঞ্জ থানা পুলিশ ও প্রশাসন নিচ্ছে না কোন পদক্ষেপ। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে প্রতি মাসে উপজেলায় আইন শৃঙ্খলার মিটিং হলেও তা যেন থেকে যাচ্ছে কাগজ কলমে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শহরের মহাসড়ক থেকে স্ট্যান্ড সরিয়ে
দূরে নেয়ার উদ্যোগ হয়েছিল। কিন্তু তখন দলীয়সহ অনেকের প্রভাব দেখিয়ে সবকিছুই বন্ধ করে দেয়। এখন তো আর কোনো দল ক্ষমতায় নেই, তবে একটি গোষ্ঠি প্রভাব খাটিয়ে শহর মধ্যে স্ট্যান্ড দিয়ে দখল করে চাঁদাবাজী করছে।

বীরগঞ্জের তাজমহল মোড়ে প্রতিদিন দেখা দেয় তীব্র যানজট। অনেক সময় এই রাস্তায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এর কারণ এই রাস্তার উপরে বাস স্ট্যান্ড আর অটো রিকশা, সিএনজির স্ট্যান্ড। বীরগঞ্জে নির্ধারিত কোনো স্ট্যান্ড নেই এমনটাই জানান ৩ চাকা ভ্যানের চালক মো. হাবিব ইসলাম।
পৌরসভার ট্রাফিক বদিউল ইসলাম বলেন, আমার হাতে লাঠি আর বাঁশি দিয়েছে কিন্তু আমি ব্যবহার করতে পারিনা। ভ্যান ও অটোরিকশার ড্রাইভাররা আমাকেই উল্টো ধমক দেয়।
এবিষয়ে বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল গফুর বলেন, যানজট নিরসনে যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য এলাকার লোকজনের সাথে কথা হয়েছে এবং আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা রয়েছে।
বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক তানভীর আহমেদ ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, এজন্য ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে শহরে পৌরসভার পক্ষ থেকে ৪ জন ট্রাফিক দিয়ে যানযট নিরসনের জন্য কাজ করছে। আমরা মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচার করছি এবং হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে।