বীরগঞ্জে সংক্রমণের উৎস অজানা, খোলা থাকবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

নাজমুল হাসান সাগর:

গতকাল প্রথম দিনের মতো দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় এক সাথে চার জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মাঝে একজন বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার। একজন বীরগঞ্জ সদরের ইসলামী ব্যাংকের পিয়ন এবং বাকি দুইজন উপজেলার নীজপাড়া ও পাল্টাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

কোভিট-১৯ পজেটিভ ব্যক্তিরা কিভাবে ও কোথায় থেকে সংক্রমিত হয়েছেন এমন তথ্য নিশ্চিত করে জানা যায়নি। এ ব্যাপারে কথা হলে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পঃপঃ কর্মকর্তা আনোয়ার উল্যাহ বলেন, আক্রান্ত চারজনের মধ্যে নিজপাড়া ও পাল্টাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া ও ঢাকা ফেরত। তারা দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে বাড়ি এসেছেন। অনুমান করা হয় তারা নিজের কর্মস্থল বা বাড়ি ফেরার পথে আক্রান্ত হয়েছেন। বাকি দুইজনের একজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার। যিনি উপজেলার করোনা আক্রান্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। নিশ্চিত করে বলা না গেলেও এটা স্পষ্ট যে তিনি নিজের কাজ করা কালীন সময়ে যেকোন ব্যক্তির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন। এদিকে থানা সদরের ইসলামী ব্যাংকের পিয়ন কিভাবে সংক্রমিত হয়েছেন সেটা অনুমান করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি বীরগঞ্জে কমুনিটি ট্রান্সফরমেশন হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে উপজেলার বাসিন্দাদের সতর্ক হয়ে চলার অনুরোধ করে এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্ক হয়ে চলার আহবান করা হচ্ছে। কারণ,আরো অনেকেই আছেন চারপাশে যারা করোনায় আক্রান্ত কিন্তু এখনো শনাক্ত হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে কি ধরনের স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে এ ব্যাপারে গতকাল উপজেলা প্রশাসনের এক জরুরী সভায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সংক্রমিত হওয়ার পরে বীরগঞ্জের একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স লকডাউন করা হবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আনোয়ার উল্যাহ আরও বলেন, যেহেতু আক্রান্ত কর্মকর্তা সংক্রমিত হওয়ার আগে শুধু নমুনা সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ছিলেন এবং এই হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসা সেবার সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা ছিলো না তাই হাসপাতাল লকডাউন করা হবে না। কারণ উপজেলাবাসীর জন্য চিকিৎসা সেবা পাওয়ার মাধ্যম এই একটাই।এটা লকডাউন করলে চিকিৎসা সেবার খুবই খারাপ অবস্থা হবে।তবে,হাসপাতালের প্রত্যেকটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া আছে তারা যেন সাধ্যমতো স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে হাসপাতালে আসেন। কোন ভাবেই চিকিৎসা সেবা প্রদান থেকে বিরত থাকা যাবে না।

এদিকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া ফেরত ব্যক্তি একজন রাজমিস্ত্রী। তিনিসহ আরো ছয় জন এক সাথে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া থেকে বাড়ি ফেরার বিষয়টি গোপন করেছিলেন।গোপন করে যত্রতত্র চলা ফেরা করেছেন।এক পর্যায়ে জ্বর ও কাশি দেখা দিলে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং তার শরীরে কোভিট-১৯ পজেটিভ পাওয়া যায়। বর্তমানে তিনি স্থানীয় একটি প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন সেন্টারে আছেন। আক্রান্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি কক্ষে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

এছাড়া আক্রান্ত বাকি ব্যক্তিদের সকলকেই নির্দিষ্ট জায়গায় আইসোলেশনের ব্যবস্থাসহ প্রত্যেকের বাড়ি ও আশেপাশের বাড়িগুলোকেও লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *