‘এটি কনভোকেশনের সেরা ও শ্রেষ্ঠ ছবি। নিশ্চিত সে পৃথিবীর সব থেকে সুখী পিতা,নিজে রিকশা চালিয়ে সন্তানকে পড়িয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে। স্যালুট গর্বিত পিতা ও তাঁর সন্তান কে।’
এমন ক্যাপশনসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে পিতাকে৩ রিকশার আসনে বসিয়ে পুত্র নিজের গাউন পরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আদতে ‘ভাইরাল’ হওয়া ছবির সাথে ক্যাপশন অতটুকু সত্য?
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছবিটি শাহরিয়ার সোহাগ নামের এক তরুণের তোলা। তার বক্তব্য থেকে জানা যায় ক্যাপশনগুলো অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। সোহাগ ছবিটির পেছনের কাহিনি সম্পর্কে বলছেন, ‘প্রোফেশনালি কিংবা শখের বসে ছবি তোলা আমার নেশা। লেখালেখি করি বিধায় কৌতূহলটাও বেশি। ক্যামেরা নিয়ে সেদিন ঘুরতে থাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।’
এই তরুণ বলেন, ‘আমার মামা লিটন মোস্তাফিজ ও তার বন্ধুরা সমাবর্তন উদযাপন করছিলো। তাদেরও কিছু ছবি তুললাম। অপরাজেয় বাংলার সামনে আসতেই একজন বৃদ্ধ রিকশায় বসে অনেকক্ষণ টুপি উড়ানো দেখছিলেন। কৌতূহল নিয়ে কাছে গেলাম আমি আর মামা। ‘তাঁর ছেলেও নাকি পাশ করেছে। আমি বিস্তারিত অনুসন্ধান কিংবা জেরা করার প্রয়োজন মনে করিনি। কারণ এমন ঘটনা এখন অহরহ।’
সোহাগ নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে সবিস্তারে বলেন, ‘গ্রাম থেকে উঠে আসা ছেলেমেয়ারাই এই গ্রাজুয়েটের একটা বড় অংশ। উনার সন্তান সমাবর্তন টুপি পরেছেন বা পরবেন সে যা ই হোক, উনি একজন বাবা। তারও সন্তান আছে। আর আজ যারা গ্রাজুয়েট তারাও কোনো না কোনো বাবার সন্তান। অনেককে শুনেছি তাকে বাবা বলে সম্বোধন করতে। আর এত মানুষের বাবা ডাকে উনি তখন আবেগপ্লুত।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমার তোলা কয়েকটা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করি। অনেকে অনেক ভাবেই ছবিগুলোতে অতিরঞ্জিত ক্যাপশন ব্যবহার করেছেন। অনেকে আবার ছবি নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করেছেন। নিজের ভালো লাগার জায়গা থেকে ছবিগুলো পোস্ট করার পর ছবিগুলো রীতিমতো ভাইরাল।’
ওই রিকশাচালককে বাবা হিসেবে কল্পনা করার আহবান জানিয়ে সোহাগ বলেন, ‘আলোচনা কিংবা সমালোচনা কে পাশ কাটিয়ে নিজেকে গ্রাজুয়েট ভাবুন আর বৃদ্ধর ক্লান্ত মুখে নিজের বাবাকে কল্পনা করুন। বাবারা তো একই রকম হয়। আলাদা শুধু চেহারাটা। সব বাবাদের ভেতরটা একই রকম। এখন থেকে রিক্সায় উঠলে কিংবা যে কোনো কাজে বয়োজ্যেষ্ঠ দের যেন সম্মানন করি। কারণ আমাদের বাবারা আমাদের কারো কাছ থেকেই যেন কষ্ট না পান। সব বাবারা ভালো থাক। এপারে কিংবা ওপারে।’