নাজমুল হাসান সাগরঃ
আমাদের জরুরি প্রয়োজনে রক্তের দরকার হয়। ল্যান্ডফোনের দিনগুলিতে বিটিভিতে মুমূর্ষু রোগীর জন্য রক্তের চেয়ে দেওয়া হত জরুরি বিজ্ঞাপন।সে সময় ব্লাড ব্যাংক আর কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উপরই নির্ভর করতে হত। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে এখন রক্তদান ও রক্তের সন্ধান পাওয়া যায় সহজেই। তবে এতে সময়টা লেগে যায় অনেকক্ষণ।
বাংলাদেশের এ্যাপ ডেভেলপাররা চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ভাল এপ বানাতে। সেই চেষ্টারই সর্বশেষ সংযোজন লাইফলাইন ২৪/৭ এ্যাপ। এই এ্যাপের মাধ্যমে আপনি ডোনার হিসাবেও রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন, আবার এমনি মেম্বার হিসাবেও জয়েন করতে পারবেন। ডোনার হিসাবে রেজিস্ট্রেশন করলে আপনাকে যে কেউ রক্তের জন্য ফোন দিতে পারবে। মেম্বার হিসাবে জয়েন করলে আপনার মোবাইল নাম্বার হিডেন থাকবে। কেউ যদি মিস ইউজ করে নাম্বারের সেক্ষেত্রে এডমিনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। রক্তের দরকার হলে আপনি এখানে বিস্তারিত পোস্ট দিতে পারবেন। আপনি পোস্ট দেওয়ার পর পরই ওই জেলার প্রয়োজনীয় রক্তের গ্রুপের ডোনারের কাছে নোটিফিকেশন চলে যাবে। আপনি পোস্ট ছাড়াও নির্দিষ্ট রক্তের গ্রুপের জন্য জেলা এবং ব্লাডগ্রুপ ওয়াইজ সার্চ করতে পারবেন।
আপনার ফিডে দেশের কোথায় কোথায় রক্তের প্রয়োজন তা সহজেই জানতে পারবেন। আপনি সাহায্যও করতে পারবেন। কোন গ্রুপের রক্তদাতা কোন গ্রুপের রোগীকে রক্ত দিতে পারবেন তাও জানতে পারবেন। আপনার সর্বশেষ রক্তদানের তারিখটি দিয়ে আপনার রক্তদানের ট্র্যাক রেকর্ড রাখতে পারবেন।
এমন একটি এ্যাপ তৈরী করেছেন নাঈম মাহফুজ শাহীন। শাহীন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩য় বর্ষে বিএসসি করছেন কম্পিউটার সাইন্স এ্যাণ্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’এ । নিজের পড়া শোনা ও সৃষ্টিশীল কাজ করতে চাওয়ার সুবাদেই এমন একটি এ্যাপ তৈরীতে মননিবেশ করেছিলেন এই উদীয়মান তরুন ডেভেলপার। এত এত কাজ করার যায়গা থাকতে কেনো রক্ত দেওয়া-নেওয়ার মতো একটি এ্যাপ ডেভেলপ করলেন?
এমন প্রশ্নের জবাবে শাহীন বলেন, মুলত রক্ত দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টা খুব সেনসেটিভ। যখন দরকার হয় তখন খুব অল্প সময়ের মধ্যে এটা যোগার করা খুব মুশকিল হয়ে যায়। রক্ত দেওয়া-নেওয়ার ব্যাপারে বেশ কিছু প্লাটফর্ম থাকলেও সেগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে যোগার করা হয়ে উঠে না। আমার চিন্তা ছিলো একটা এমন প্লাটফর্ম তৈরী করা যেটার মাধ্যমে মুহুর্তের মধ্যেই রক্ত যোগার করা সম্ভব। মূলত এই প্রয়াস থেকেই এমন একটি এ্যাপ ডেভেলপ করার চিন্তা আমার মাথায় আসে। এই চিন্তা থেকেই কাজে লেগে যাওয়া এবং কাজের ফলশ্রুতিতে এখন একটি এ্যাপ আমি বানাতে পেরেছি।এ্যাপটি বানাতে সময় লেগেছে তিন সপ্তাহ।