মৃদু ও মাঝারী শৈত্য প্রবাহে অনেকটাই বিপর্যস্ত জনজীবন। রাতে এমনকি দিনের প্রথম প্রহরেও ঘন কুয়াশায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। শীতবস্ত্রের অভাবে কনকনে ঠাণ্ডায় ভুগছেন হতদরিদ্ররা। এদিকে, ঠান্ডাজনিত রোগ বালাইয়ে নাকাল শিশু ও বৃদ্ধরা।
সারা দেশেই বইছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত কুয়াসার চাদরে ঢাকা থাকে চারপাশ। যার তীব্রতা উত্তরের জেলাগুলোতে বেশি। আজ শুক্রবার চুয়াডাঙ্গার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। জেলায় শৈত্য প্রবাহ আরও কয়েকদিন বইতে পারে, এমনটাই আভাস আবহাওয়া অফিসের। ঘন কুয়াশায় যানবাহন চলাচল চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রামে শুক্রবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গরম কাপড়ের অভাবে নাজেহাল হতদরিদ্ররা। যদিও সরকারিভাবে ৫৭ হাজার কম্বল ছাড়াও আরও ৫ হাজার কম্বল পাওয়া গেছে বলে জেলা ত্রান ও পূণর্বাসন অফিস জানিয়েছে।
হিম হিম ঠান্ডায় হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাস কষ্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। কৃষি জমিতেও পড়ছে বিরূপ প্রভাব। এদিকে, গবাদি পশুর শীত নিবারণ নিয়ে বিপাকে মালিকরা। ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় স্থবির হয়ে পড়েছে লালমনিরহাটের জনজীবনও। ঠান্ডার প্রকোপ অসহনীয়। শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। সবচেয়ে বিপাকে খেটে খাওয়া দিনমজুররা।
সিরাজগঞ্জে প্রচন্ড শীতে জনজীবন স্থবির। শীত নিবারণে দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষেরা ছুটছেন ফুটপাতের পুরানো কাপড়ের দোকানে। এদিকে, পেটের পীড়া ও সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের ভিড় বাড়ছেই সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে।
কুয়াসার চাদরে ঢাকা উত্তরের জেলা নাটোর। শিশিরে ভেজা চারপাশ। এরই মধ্যে পরিবারের মুখে আহার যোগাতে নিম্ন আয়ের মানুষদের নামতে হচ্ছে কাজে। এত শীতের মধ্যেও কাজ করে ন্যায্য মুজুরি না পেয়ে ক্ষুব্ধ নারী শ্রমিকরা। ঘন কুয়াশায় ঝুঁকি নিয়ে হেডলাইট জ্বালিয়ে রাস্তায় চলছে যানবাহন।
উত্তরের হিমেল হাওয়ায় পঞ্চগড়ে হাড় কঁপানো শীত। কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও, বৃহস্পতিবার থেকে আবার তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে জেলায়। রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে শীতের তীব্রতা প্রতিদিন বেড়েই চলছে। সকালে রংপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠনগুলো দু:স্থ ও দরিদ্র মানুষদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করছেন।
জামালপুরে প্রচন্ড শীত আর ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত। আর এতে নিন্ম আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেশি বেড়েছে। টানা কয়েকদিনের মৃদু শৈত্য প্রবাহে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা। এদিকে, ছিন্নমূল ও দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র দিচ্ছে জামালপুর জেলা প্রশাসন।