হারিয়ে যাওয়ার মন্ত্রটা যে জানিনা

উঠোনের দক্ষিন কোনটা এখনো পড়ে আছে ফাঁকা
রোজ রাতে সেখানে বসেই,
আকাশ পানে দৃষ্টি হতো রাখা।

মহাশূন্যের নীল সাগরে,
অসংখ্য খন্ড মেঘের আড়ালে
শ্বেত হংসের মতো ডুব সাঁতার শেষে,
উদিত হতো পূর্ণিমার চাঁদ,
আমি আর বাবা নিস্পলক চোখে
সেই চাঁদ দেখে কাটিয়ে দিতাম রাত।

আমি কখনো চন্দ্রস্নানে যাইনি,
দেখিনি সমুদ্রবুকে চাঁদের ঝলকানি।
তবুও বাবার চোখে সমুদ্রবুকে হারিয়ে যেতাম রোজ,
সেখানে পেতাম চন্দ্র, সূর্য নীহারিকাপুঞ্জের খোঁজ।
বাবার চোখে নিমজ্জিত এই আমি
খুজে পেতাম অনাবিস্কৃত ধনরত্ন,
সে সকল রত্ন যেগুলো জগৎ’এ সবথেকে দামি।

আহত বনমোরগের আত্মকথা,পাখ পাখালির দুঃখ ব্যথা,
কুড়িয়ে এনে জমিয়েছিলাম বাবার সীমাহিন বুকপকেটে।
আকাশ নক্ষত্র ঘাসে,পাহাড়ি সবুজের দেশে, এখনো হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে
বাবার চোখ দিয়ে সমুদ্রের তলদেশে।

বাবাটা ছিলো এমন,
বেশিক্ষণ দৃষ্টির আড়ালে থাকলে উতলা হতো আমার মন।
কুমড়ো ফুল আর অচিন পাখিদের দিয়ে পাঠাতাম বার্তা বাবার কাছে,
সব কাজ ফেলে ছুটে আসো বাবা আমার মাঝে।

আজ সহস্র যুগ ধরে,
পথ চেয়ে বসে আছি বাবা তোমার তরে।
তুমি এখন কোথায় বাবা?
কোন সমুদ্রের তলে?

আমায় ছেড়ে লুকিয়ে আছো,
মনের দেয়ালে আঙুলের ছাপ ফেলে।
এখন শত চেষ্টাতেও যে আর তোমার চোখে
হারিয়ে যেতে পারিনা,
কেননা তোমার চোখে হারিয়ে যাওয়ার
মন্ত্রটা যে জানিনা।

 

লিখেছেনঃ জলস্পর্শী তটিনী 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *