প্রস্তাবিত ডিজিটাল কালো আইন সংশোধন এবং ৩২ ও ১৯ ধারা অবিলম্বে বাতিল না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাংবাদিকরা। শনিবার সকালে রাজধানীর শাহাবাগে ‘আমরা সংবাদকর্মী’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। এ সময় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর পদত্যাগও দাবি করেন সাংবাদিকরা।
সাংবাদিকদের বিক্ষোভ কর্মসুচিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, সাংবাদিকদের জন্য কোনো আইন থাকতে পারে না। আইন করে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা যাবে না। অবিলম্বে এই কালো আইন বাতিল করতে হবে। অন্যথায় রাজপথে কঠোর আন্দোলন করা হবে।
মানববন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, সরকার আমাদের কথা দিয়েছিল, ৫৭ ধারা বাতিল করা হবে। কিন্তু বাতিলের নামে ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি আইনের নামে যে কালো আইন করা হয়েছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। আমরা সংবাদকর্মীরা দেশের জন্য কাজ করি, দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। এই আইন দিয়ে আমাদের কাজ বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই কালো আইন দিয়ে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টা চলছে। অবিলম্বে এই আইন বাতিল না করলে কঠোর আন্দোলন করা হবে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সমালোচনা করে সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, সারা দেশে সাংবাদিকদের এই ৩২ ধারায় মামলা হবে। আপনি কত জায়গায় গিয়ে লড়বেন। নাকি মন্ত্রণালয়ের কাজ করবেন। আপনার এসব টালবাহানা বন্ধ করেন। কালো আইন বন্ধ করেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ বলেন, কোনো ধরনের কূট-কৌশল, কালো আইন কিংবা জেল জরিমানা করে অনুসন্ধানী সাংকাদিকতা বন্ধ করা যাবে না। হয়রানি নির্যাতন বা কারো রক্তচুক্ষ আমাদের থামাতে পারবে না। সত্য প্রকাশ, দেশ ও জাতির কল্যাণে, সত্যের সন্ধানে আমরা সদায় দুর্বার দুর্জয়। আমাদের অবিচল এ পথ চলা কোনো বাধাই থামাতে পারবে না।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বন্ধ করতেই এই ৩২ ধারার করা হয়েছে। এই কালো ধারা বাতিল করতে হবে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, আমাদের দেশের সংবিধান বলে গণমাধ্যম স্বাধীন। কিন্তু সেই গণমাধ্যমের স্বাধীতনা আমরা দেখছি না। তাই আজ আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি। আমরা সংবিধানের অধিকার সমুন্নত রাখতে চাই। তাই অবিলম্বে এই ৩২ ধারা বাতিল করতে হবে।
কোন ধরনের কলা কৌশল, কাল অাইন কিংবা জেল জরিমানা করে অনুসন্ধানী সাংকাদিকতা বন্ধ করা যাবে না। হয়রানি নির্যাতন বা কারো রক্তচুক্ষ অামাদের থামাতে পারবে না। সত্য প্রকাশে, দেশ ও জাতির কল্যাণে, ষত্যের সন্ধানে অামরা সদায় দুর্বার দুর্জয়। অামাদের অবিচল এ পথ চলা কোন বাধাই থামাতে পারবে না বলে জানান ক্র্যাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক উমর ফারুক আলহাদী।
তিনি বলেন, এই ধারা বাতিল না হলে সাংবাদিকতা বলতে কিছু থাকবে না। এই কালো আইন করে গণমাধ্যমকে সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। অবিলম্বে এই ৩২ ধারা বাতিল না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন এই সাংবাদিক নেতা। মানববন্ধনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের কয়েক’শ সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।