নাজমুল হাসান সাগর | “সেই সাত তারিখ থেকে অজানা আগুন আতঙ্কে ভুগছি।না জানি কখন আবার আগুন লাগে,পুরে ছাড়খার হয়ে যায় সব। দিন কিংবা রাত কোন সময়ই শান্তিতে থাকতে পারছি না। প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে বালতি,গামলা বা বড় বড় পাত্রগুলোয় মজুদ রাখা হয়েছে পানি। সবাই যার যার বাড়ি পাহারা দিচ্ছি। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে ঘটনার দিন গত সাত তারিখ থেকেই।আগুনের আতঙ্কে চুলাও জ্বালানো হয় না তাই রান্নাবাড়াও বন্ধ। জীবন নিরাপদে রাখতে বসবাসের জায়গা থেকে দূরে হাল ক্ষেতে অস্থায়ী আবাস গাড়া হয়েছে।”
অজানা আগুন আতঙ্কে থাকা খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের গোবীন্দপুর গ্রামের বয়েজউদ্দীন পাড়ার মীম ও জীম জানাচ্ছিলেন এমন কথা। তারা দুজনেই দশম শ্রেণীতে পড়া লেখা করছেন। তারা আরোও জানান,”ঘটনার দিন থেকে আজ পর্যন্ত না হয়েছে ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া না হয়েছে পড়া শোনা।আগুন আতঙ্কে সবাই যার যার মাল-ছামানা উঠিয়ে নিয়ে রেখেছে হাল ক্ষেতে বানানো অস্থায়ী তাবু বা ঘরে।বই পত্র কোথায় আছে বলতে পারছি না,সেদিন(ঘটনার দিন) থেকে স্কুলে যাওয়া হয় না। লেখা পড়ার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।” ” আমার বইগুলো বস্তায় ভোরে রাখা হয়েছে” কাচুমাচু মুখে এমন কথা জানান মীম।
নানা বয়সি ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বয়েজউদ্দীন পাড়া থেকে এবার বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রী এস.এস.সি পরীক্ষা দিচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে তাদের সাথে কথা বলতে চাইলে তেমন কারুকে পাওয়া যায় নাই।কেও কেও আবার আত্নীয় বাড়িতে গিয়ে পরীক্ষার জন্যে স্বাভাবিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানায় স্থানীয় ব্যক্তিগণ।
এছাড়াও চতুর্থ শ্রেণীর ইমন ও সোহাগ এবং পঞ্চম শ্রেণীর সাদিকা’র সাথে কথা হলে তারা গুছিয়ে কিছু না বলতে পারলেও যা বলেছেন সেটার মর্মার্থ হলো, এই অজানা আগুন আতঙ্কের দ্রুত সমাধান চাই এবং আগের মতো নিয়মিত পড়া শোনা আর স্কুলে যেতে চাই।
উল্লেখ্য গত সাত তারিখ থেকে অজানা আগুন আতঙ্কে ভুগছে এই পাড়ার মানুষ।কোথা থেকে আগুন লাগছে, কেনো আগুন লাগছে এর কোন কারণ এখনো আবিষ্কার করা যায় নাই। ঘটনার তিন দিন পর সেখানে উপজেলা প্রশাসন কর্মকর্তা ও আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপস্থিত থেকে দ্রুত একটা ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন।কিন্তু বলার মতো এখনো কোন কার্যকরী পদক্ষেপ চোখে পরেনি।তবে ভুক্তভোগী মানুষগুলোর নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা জনাব আহমেদ মাহবুব ও জন-প্রতিনিধি আ.স.ম আতাউর রহমান বাচ্চু।