প্রথমে অপহরণ। তার পর ধর্ষণ করে খুন। লাহৌরের কাসুরে সাত বছরের শিশু জয়নাব আনসারির সেই ভয়াবহ পরিণতির পর গর্জে উঠেছিল গোটা পাকিস্তান। সেই ঘটনায় দোষী ইমরান আলিকে পর পর চার বার ফাঁসির সাজা শোনাল পাকিস্তানের একটি আদালত। মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে বিকৃত যৌন আচরণের জন্য।
গত বৃহস্পতিবার বিচারক সাজ্জাদ আহমেদ জয়নাবকে খুন, অপহরণ, ধর্ষণ এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কের সঙ্গে অনৈতিক কাজের দায়ে ইমরানকে দোষী সাবস্ত করেন। এই চার অপরাধের জন্য আলাদা আলাদা ভাবে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয় শনিবার।
পাক সংবাদপত্র ডন-এর খবর, বিচারের সময় ইমরানকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সে সময়ই ইমরান অপরাধ কবুল করে। রায় ঘোষণার পর সরকারি কৌশুলি কাদের শাহ বলেন, ‘‘শিশু জয়নাবের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ইমরানের চার বার ফাঁসি এবং যাবজ্জীবন সাজার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর আদালতে আবেদন করার জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে ইমরানকে।
জানুয়ারির গোড়ায় জয়নাবের বাবা-মা ‘উমরাহ’ (মুসলিমদের তীর্থযাত্রা) করতে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। সে জন্য আত্মীয়দের কাছে থাকছিল মেয়েটি। তখনই জয়নাবকে অপহরণ করেছিল ইমরান। চার দিন নিখোঁজ থাকার পর, ১০ জানুয়ারি আবর্জনার স্তূপ থেকে তার দেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তে প্রকাশ, ধর্ষণের পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে জয়নাবকে। এই ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল পাক-পঞ্জাব। পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে দু’জনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল।
তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রধান ইমরান খান, প্রাক্তন সামরিক শাসক পারভেজ মুশারফ থেকে শুরু করে শোয়েব মালিক, মহম্মদ হাফিজের মতো ক্রিকেটার, সকলে একযোগে সরব হয়েছিলেন।
এই ঘটনার পরই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে লাহৌর পুলিশ। পুলিশি জেরায় নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে সে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, গত এক বছরে ওই জেলায় ধর্ষণ করে ১২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আটটি ঘটনায় ধর্ষকের ডিএনএর সঙ্গে ইমরানের ডিএনএ-র মিল পাওয়া গিয়েছে বলেও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।