অর্থাভাবে গর্ভে থাকতেই সন্তান বিক্রি!

বীরগঞ্জ নিউজ২৪ ডেস্কঃ

হতদরিদ্র রাবেয়া গর্ভের অনাগত সন্তান বিক্রির টাকা ফেরৎ দিয়েছেন বকশীগঞ্জ উপজেলার ইউএনও দেওয়ান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। মানবতার টানে একই সময় রাবেয়ার ঋণ পরিশোধ ও তাকে সার্বিক সহযোগিতার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।

জানা যায়, উপজেলার পশ্চিমপাড়ার ৪ সন্তানের জননী হতদরিদ্র রাবেয়া (৩০) বর্তমানে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার স্বামী জাহাঙ্গীর দিনমজুর। সাংসারিক প্রয়োজনে স্থানীয় গ্রামীণ ব্যাংক ও এনজিও আশার কাছ থেকে রাবেয়া নিজ নামে সাপ্তাহিক কিস্তিতে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নেন।

কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পেরে চাপের মুখে ৪ সন্তান ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রাবেয়াকে রেখে জাহাঙ্গীর নিরুদ্দেশ হন। কোন উপায় না পেয়ে রাবেয়া সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু অন্ধ বাবার পক্ষে কন্যা ও তার ৪ সন্তানের ভরণপোষণ অসম্ভব হয়ে পড়ে।

তাই সন্তানসহ অর্ধাহারে অনাহারে দিনকাটতে থাকেন রাবেয়ার। একদিকে অভাব অন্যদিকে কিস্তির চাপ রাবেয়াকে অতিষ্ট করে তুলে। তাই উপান্তর না পেয়ে রাবেয়া নিজের গর্ভের অনাগত সন্তান ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। সন্তানের ক্রেতার কাছ থেকে সংসার চালানোর জন্য রাবেয়া ৫ হাজার টাকা অগ্রিম নেন। অবশিষ্ট ৩৫ হাজার টাকা সন্তান প্রসব ও হস্তান্তরের সময় দেওয়া কথা।

এ খবর শোনে উপজেলার নির্বাহী অফিসার দেওয়ান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুক্রবার বিকালে রাবেয়ার বাড়িতে ছুটে যান। বিস্তারিত জেনে এবং রাবেয়ার পারিবারিক অবস্থা দেখে তিনি রাবেয়ার হাতে ১৫ হাজার টাকা তুলে দেন। একই সময় উপজেলা মহিলা বিষয়ক সুপারভাইজার রাবেয়াকে মাতৃত্বভাতা বাবদ ২০ হাজার টাকা সহায়তা দেন।

রাবেয়া বলেন, উপজেলা প্রশাসনের সহায়তার কারণে আমি আমার পেটের সন্তানকে রক্ষা করতে পেরেছি। একজন মায়ের পক্ষে এর চেয়ে খুশির খবর আর কি হতে পারে।

দেওয়ান তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে চলছে তখন অভাবের তাড়নায় অনাগত সন্তান বিক্রির ঘটনা মর্মান্তিক। তাই সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে মানবিক কারণে রাবেয়ার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। সমাজের বিত্তবানরা রাবেয়ার পাশে দাঁড়ালে রাবেয়ার বর্তমান অবস্থা পাল্টে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *