নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
শিক্ষা অর্জনের পথে অর্থই যখন বড় অনর্থ হয়ে দাড়ায় তখন মধ্যবিত্ত আর নিন্মবিত্তের নাভিশ্বাস উঠে। দেশের আটটি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এস এস সি পরীক্ষার ফর্মপূরণ চলছে মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতে। কিন্তু প্রতিবছরের ন্যায় এবারো ফর্মপূরণে নির্ধারিত বোর্ড ফি- ১৫৫০ টাকা বাদেও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত দুই থেকে তিন হাজার টাকা। সে টাকা সংগ্রহ করা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য খুব কষ্টকর।
বিশেষত নিন্মবিত্তের কাছে ‘মড়ার উপর খাড়ার ঘাঁ’ হয়ে দাড়িয়েছে। তেমনি উত্তরের জেলা দিনাজপুরে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সন্তানের সাথে আসা অভিভাবকরা তিক্ত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। ডিম, হাঁস-মুরগী ও ছাগল বিক্রি করে কেউবা টাকা সংগ্রহ করেছেন সুদের উপর কিংবা দিনমজুরি করে জমানো টাকা। জেলা শহরের সুইহারীতে অবস্থিত চেহেলগাজী শিক্ষা নিকেতন স্কুল এণ্ড কলেজে গিয়েও জানা যায় অতিরিক্ত টাকা গ্রহণের তথ্য। পনের শত পঞ্চাশ টাকা বোর্ড ফি’র বিপরীতে নেওয়া হচ্ছে ৩০১৫ টাকা। কর্তব্যরত শিক্ষকরা বলেন বিদায় অনুষ্ঠান, বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ফি ও আনুসঙ্গিক কারণে এসব টাকা গ্রহণ করা হচ্ছে। অপরদিকে শহরের জুবিলী উচ্চবিদ্যালয়ে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা তদন্তে এসে সত্যতা খুঁজে পেয়েছেন। তাৎক্ষণিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বোর্ড ও কেন্দ্র ফি- জন্য ধার্য শুধুমাত্র১৭৫০ টাকা নিতে বাধ্য করেন, সেই সাথে গৃহীত অতিরিক্ত টাকা ফেরত প্রদানের নির্দেশ দেন। এজন্য জুবিলী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা দুদক’কে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এছাড়াও জেলার বিরল উপজেলার কানাইবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে অতিরিক্ত টাকা সহ বিদ্যালয়ে কোচিং করানোর নামে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে আরো এক হাজার টাকা। তাছাড়াও উপজেলার ফরাক্কাবাঁধ দ্বী-মুখী উচ্চবিদ্যালয়, বীরগাঁও উচ্চবিদ্যালয় সহ জেলার অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার ফর্মপূরণের নামে চলছে বাড়তি টাকা আদায়ের পায়তারা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কতৃক বেশি অর্থ আদায় না করার নির্দেশ থাকলেও, স্কুল কর্তৃপক্ষ তা যেন তোয়াক্কাই করছেন না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যখন শিক্ষিত-সমৃদ্ধ জাতি গড়ে তুলতে দৃঢ় প্রত্যয়ী, ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়মুখী করতে বিনামূল্যে বই ও উপবৃত্তি প্রদান করছেন; তখন স্বার্থান্বেষী এক শ্রেণির মানুষ নিজের পকেট ভারী করতে লুটে নিচ্ছে নিন্মবিত্তের সর্বস্ব, তুলছে নাভিশ্বাস। ছাত্র-ছাত্রীদের করছে বিদ্যালয় বিমুখ। তবে- “শিক্ষাই জাতীর মেরুদণ্ড”- এই প্রবাদটি কতটা প্রতিষ্ঠিত হবে? সে প্রশ্ন থেকে গেলো সচেতন মহলে! সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে গ্রহণ করা অতিরিক্ত অর্থ ফেরত এবং যেসব বিদ্যালয়ে ফর্মপূরণ চলমান তারা নির্দিষ্ট ফি -তে ফর্মপূরণে সচেষ্ট হউক। এজন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি একান্তই কাম্য।