জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান দাবি করেছেন, গত ৫৪ বছরে দেশে যারা খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, চাঁদাবাজি এবং নির্যাতন করেছে, তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা উচিত। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
শফিকুর রহমান বলেন, “আমাদের দাবি, নিরপেক্ষ সরকার এই তালিকা প্রকাশ করুক। দলীয় সরকার হয়তো এই উদ্যোগ নেবে না। জনগণ তাদের চেনার অধিকার রাখে, যারা বিগত ৫৪ বছরে দেশের সাধারণ মানুষকে নির্যাতিত করেছে।”
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সুমনের বাবা ফারুক হোসেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, মজলিশে শুরার সদস্য মমতাজ উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন, আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।
সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ২৬ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, “তারা গণতন্ত্র চায়নি, চেয়েছে উন্নয়ন। সেই উন্নয়নের নামে রডের বদলে বাঁশ দিয়েছে, সিমেন্টের সঙ্গে ছাই মিশিয়েছে। আমরা যখন এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি, তখন আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, হত্যা, গুম, এবং জেলজুলুমের শিকার হতে হয়েছে। তবে আমরা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করিনি।”
সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনারা এমন একটি বাংলাদেশ চান, যেখানে আতঙ্কে থাকতে হবে না। যারা কখনো আপনাদের জমি দখল করেনি, সম্পদ লুণ্ঠন করেনি, সেই দলকেই বেছে নিন। বিবেকের চক্ষু দিয়ে খুঁজলেই সেই দলকে খুঁজে পাবেন।”
ওবায়দুল কাদেরের একটি পুরোনো বক্তব্যের সমালোচনা করে জামায়াতের আমির বলেন, “তিনি বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দুই দিনের মধ্যে পাঁচ লাখ নেতা-কর্মী খুন হবে। বাস্তবে এমন কিছু ঘটেনি। বরং জনগণ তাদের দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে।”
সম্মেলনের দিন সকাল থেকে দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের জেলা থেকে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা বাস ও মাইক্রোবাসে করে সম্মেলনস্থলে আসেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মী সমাবেশটি জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
প্রতিবেদক: ইউসুফ আলী