বীরগঞ্জে বিশেষ সুবিধায় এস,এস,সি পরীক্ষা দিচ্ছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী রবি

নাজমুল হাসান সাগর: বীরগঞ্জ উপজেলার “ঝাড়বাড়ী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়”র এস,এস,সি পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশেষ সুবিধায় পরীক্ষা দিচ্ছেন রকিমুজ্জামান রবি।বাগদহ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দিতে আসা এই পরীক্ষার্থীর দুটি হাত ও একটি পা অস্বাভাবিক রকম ছোট আর বাকা। শারীরিক এই প্রতিবন্ধকতা নিয়ে স্বাভাবিক জীবন অতিবাহিত করাই যখন খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার তখন রবি একের পর এক পেড়িয়ে যাচ্ছেন শিক্ষা ক্ষেত্রের বড় বড় স্তরগুলো।

আজ ০২-০৭-২০১৮ ইং তারিখে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় বিশেষ সুবিধায় পরীক্ষা দিচ্ছেন এই পরীক্ষার্থী।পরীক্ষা কেন্দ্রে ঠিক কি ধরনের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে রবিকে এই ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয় উক্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামান সরকারের কাছে।তিনি জানান,রবির জন্যে আমরা তার প্রোয়োজন অনুযায়ী পরীক্ষার নির্দিষ্ট সময়ের বাহিরেও আলাদা ভাবে বিশ মিনিট সময় বরাদ্দ রেখেছি।তার চলাফেরা ও প্রোয়োজন অনুযায়ী এক জায়গা থেকে আরেক যায়গায় যাওয়া আসার জন্যে কেন্দ্রের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারিদের সব সময় সহায়তা করার নির্দেশ দেওয়া আছে।প্রতিদিন আমি,কেন্দ্র সচিব ও দ্বায়িত্বরত শিক্ষকগণ একবার করে খোজ নেয় এই পরীক্ষার্থীর।

এই কর্মকর্তা আরোও জানান, রবি চাইলে আবেদনের প্রেক্ষিতে তার বাড়িতে বসেও পরীক্ষা দিতে পারতো।যেহেতু সে এই আবেদন করে নাই।সেহেতু আমরা নিয়ম অনুযায়ী তাকে কেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ যে সুবিধাগুলো সে পায় একজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থী হিসেবে তার সব কিছুই আমরা তাকে দেবার চেষ্টা করেছি।

পরীক্ষা শেষে কথা হয় রকিমুজ্জামান রবির সাথে।রবি জানান, আমার শারীরিক সমস্যা থাকার কারনে স্বাভাবিক জীবন যাপন করাই কষ্ট হয়ে যায়।সেখানে পরীক্ষা দিতে আসাটা আরোও কষ্টের।তবুও আমি আমার জীবনের লক্ষ্যকে স্থির রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই সকল প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে।যে সকল সুবিধা রবি পাচ্ছেন তারপরও কোন কিছুর কমতি আছে না কি জানতে চাওয়া হয় তার কাছে।তখন তিনি বলেন, আমার হাত ছোট হওয়ায় পরীক্ষার খাতায় আমার লেখা খুব খারাপ হয়। যার কারনে বিগত জে,এস,সি পরীক্ষায় আমার ফল তুলনামূলক ভাবে খারাপ হয়েছে।যেহেতু লেখা বোঝা একটু মুশকিল হয়ে যায় তাই আমার গ্রেড পয়েন্ট খারাপ আসে।অথচ আমি এত খারাপ পরীক্ষা দেই না।

শারীরিকভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এই পরীক্ষার্থী আরোও বলেন,আমি শুনেছি প্রতিবন্ধীদের খাতা মূল্যায়নের জন্যেও নাকি বিশেষ ব্যবস্থা থাকে।যদি সত্যিই এটা থেকে থাকে,তাহলে আমার ক্ষেত্রেও যেন সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাহলে আমার গ্রেড পয়েন্ট এত খারাপ আসবে না আমি নিশ্চিত।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও লেখা পড়ার সর্বোচ্চ পাঠ চুকাতে চায় রবি।এ জন্যে নিজের দৃঢ় মনোবল তো আছেই সেই সাথে সবার দোয়া ও সহযোগীতা চেয়েছেন এই পরীক্ষার্থী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *