রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে ধানের চারা রোপণে সম্ভাবনার দ্বার

নিজস্ব প্রতিবেদক

আধুনিক যন্ত্র নির্ভর পদ্ধতিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে বোরো ধানের চারা রোপণ করেছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কৃষকরা।

কৃষিকে যান্ত্রিকীরণের ফলে শ্রমিক ও মজুর সংকট, অতিরিক্ত খরচ সাশ্রয়, ফসল পর্যবেক্ষণ ১০ ভাগ চারা সাশ্রয় করে চাষীরা লাভবান হচ্ছেন। এই যন্ত্রের সাহায্য সমগভীরতায়, সমদূরত্বে এবং অল্প শ্রমে কৃষকরা ধানের চারা রোপন করছেন। এতে সময় কম লাগবে, খরচ কমবে এবং ফলন বাড়বে এমন দাবী কৃষক ও কৃষি বিভাগের।

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে কৃষি জমিতে এ চারা রোপণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান সরকার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার,
কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আল মুক্তাদির, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম ,উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. তমিজুল ইসলামসহ আরো অনেকে।

কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ব্লক প্রদর্শনীর মাধ্যমে হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের সমলয় চাষাবাদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু করা হয়।

উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, চলতি বছরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ২০ হেক্টর। এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ১৫৬ হেক্টর।লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জণের আশাবাদ ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক, বলেন, আগে হেক্টর প্রতি জমিতে ধানের চারা রোপন করতে ৩০-৩৫ জন শ্রমিক লাগতো । এতে করে প্রায় ২১ হাজার ৬১২ টাকা খরচ হতো। এখন রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপন করতে বর্তমানে হেক্টর প্রতি খরচ হয় ১২ হাজার ৩৫০ টাকা। ফলে খরচ সাশ্রয় হয় ৯ হাজার ২৬২টাকা। অন্যদিকে হেক্টর প্রতি ১০ ভাগ ফলনও বাড়বে।

উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা শ.ম. জাহেদুল ইসলাম, পীথিরাজ রায় ও শ্রী সন্তোষ কুমার রায়, বলেন, বীজতলায় যে ধানের চারা লাগানো হয়, চারা তোলার সময় ধান গাছের চারায় আঘাত লাগে এবং মুল নষ্ট হয়। ওই এতে ফলনও কম হয়। মেশিনের সাহায্যে একটি চারা নষ্ট হয় না। রাইস প্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে ১ ইঞ্চি মাটিতে ১২০ গ্রাম ধান দিয়ে চারা লাগানো হয়। যা দিয়ে প্রতি শতাংশ জমি চাষ করা যায়। এ পদ্ধতিতে একই সাথে ৬টি লাইন করে ধান লাগানো যায়। যার প্রতিটি সারির দুরত্ব হয় ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, রাইস প্লান্টার পদ্ধতি শ্রম,সময়,অর্থৃ সাশ্রয়ের একটি আধুনিক পদ্ধতি ।যা কৃষিকে যান্ত্রিকিরণের একটি সময়োপযুগী মাধ্যম। এতে ফসলের মাঠের আন্ত:পরিচর্যা, চারার গুনগত মান ঠিক থাকে। ফলন বৃদ্ধি হয়। সরকার ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষকদের ধানের চারা রোপনের জন্য রাইস প্লান্টার যন্ত্র ও ধান কাটার জন্য কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনসহ কৃষির আধুনিক কৃষি যন্ত্র সরবরাহ করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *