হিমাগারের ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে মহাসড়কে আলু ফেলে কৃষকদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে উপজেলার হিমাগারগুলোতে আলু সংরক্ষণের হিমাগারভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মহাসড়কে আলু ফেলে পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কের পৌর শহরের বিজয় চত্বরে এ সমাবেশ করেন। এতে ওই সড়কে যান চলাচল সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে বীরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে এলাহী ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল গফুর এসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে চলে গেলে আবারও যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ক্ষুব্ধ কৃষকেরা জানান, আগে প্রতি বস্তা আলুর ভাড়া ছিল ৩০০-৩৫০ টাকা, কিন্তু এখন হিমাগার মালিকরা প্রতি কেজিতে ৮ টাকা হারে ভাড়া নির্ধারণ করেছেন, ফলে এক বস্তার ভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০০ টাকার বেশি। এতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষকদের লোকসানের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই তাঁরা দ্রুত আগের ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান। সাত দিনের মধ্যে এই দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনের পাশাপাশি মহাসড়ক অবরোধের হুমকি দেন কৃষকেরা।

তাঁদের এই কর্মসূচির সঙ্গে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ধলু ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি জেমিয়ন রায় একাত্মতা ঘোষণা করেন। তারা বলেন, এই অযৌক্তিক ভাড়া বৃদ্ধি আমাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। যদি অবিলম্বে ভাড়া কমানো না হয়, তাহলে এক সপ্তাহের মধ্যে আরও বড় কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে।

আলুচাষি ও বীরগঞ্জ আলু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক ও সাধারণ সম্পাদক হরসুন্দর বর্মণ বলেন, চলতি মৌসুমে আলু চাষে বেশি খরচ পড়েছে। আলুর আবাদ বেশি হওয়ায় হিমাগার মালিকেরা দুরভিসন্ধি করছেন। এর প্রতিবাদে গত ৩ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু কোনো সমাধান না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নেমেছেন।

বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এসে বলেন, হিমাগার ভাড়া কমানোর বিষয়ে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। এ বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তা না হলে আমরা স্থানীয়ভাবে হিমাগার মালিক, চাষী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমন্বয় করে সমাধানের আশ্বাস দেন।

শাহী হিমাগার লিঃ (৪) শীতলাই এর ম্যানেজার আরজু রহমান হিরু বলেন, বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশনের নির্দেশে এবার প্রতি কেজি ৮ টাকা করা হয়েছে। গত বছর ৭ টাকা প্রতি কেজি আলু নির্ধারণ ছিল। বর্তমানে সব কিছুর দাম বৃদ্ধি যেমন বিদ্যুৎ, শ্রমিক লেবারসহ সব কিছুরই দাম বেশি।আন্দোলনকারীরা বলছেন আমরা নাকি প্রতি কেজি দ্বিগুণ ভাড়া বৃদ্ধি করেছি। কিন্তু আমরা গত বছর ৭ টাকা এ বছর ৮ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *